Logo

শিক্ষিত তরুণদের পোশাক খাতে চাকুরী নিতে আহ্বান বিজিএমইএ সভাপতি’র

RMG Times
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
  • শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণদের ক্যারিয়ার গড়তে কর্মক্ষেত্র হিসেবে পোশাক শিল্প খাতকে বেঁছে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিজিএমইএ’র সভাপতি মি. সিদ্দিকুর রহমান। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডার’স শেয়ারিং মিটিং আইএলও আরএমজি সেন্টার অব এক্সিলেন্স প্রজেক্ট’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ আহ্বান জানান।

সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি (সিবাই), এইচএন্ডএম ও আইএলও’র যৌথভাবে এই আলোচনার আয়োজন করে।

 

অুনষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিবাস রেড্ডি বলেন, নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের পোশাক খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। তবে এ খাতে মধ্যম স্তরে দক্ষ জনশক্তির যথেষ্ট অভাব রয়েছে। মধ্যম স্তরের জনশক্তি সরবরাহ বাড়ালে এ খাত আরো এগিয়ে যাবে।

শ্রীনিবাসের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজিএমএ‘র সভাপতি বলেন, প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। এখানে আমরা কীভাবে খাপ খাওয়াতে পারি, প্রশিক্ষণের সাথে সাথে তা গবেষণার মাধ্যমেও বের করে আনতে হবে।

তিনি বলেন, পোশাক খাতকে শ্রমিকদের হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। নিজের মনে না করলে এ খাতের তেমন উন্নয়ন সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, দেশের তরুণেরা লেখাপড়া শেষে এ খাতে আসছে না তার কারণ হচ্ছে দেশের মানুষের মানসিকতা। কারণ, বিয়ে করতে গেলে এখনো বলা হয় ছেলে গার্মেন্টেসে চাকরী করে! বিয়ে হবে না!

বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের পোশাক খাত সমাদৃত। সিংহ ভাগ আয় আসে এ খাত থেকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষিত যুবক পোশাক খাতে চাকরি করতে আগ্রহ দেখায় না।

শিক্ষিত যুবকদের তৈরি পোশাক খাতে চাকরি করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ খাতে মার্চেন্ডাইজিং ও বায়িং হাউজে ভাল বেতনে চাকরি করার অনেক সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্ব তৈরি পোশাক বাজারে বাংলাদেশের শেয়ার রয়েছে ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। যেখানে চীনের শেয়ার রয়েছে ৩৬ থেকে ৩৭ শতাংশ। কিন্তু চীন তাদের পোশাক বাজার থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে। অতএব এই সুযোগে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারে আরো এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এটাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত চারলোটা স্কালাইটার বলেন, বাংলাদেশের শুরু থেকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সুইডেন পাশে ছিল। ভবিষ্যতেও থাকবে। দক্ষ কর্মী গড়ে তুলতে সিবাই তাদের প্রশিক্ষণের ধারা অব্যাহত রাখবে । ধীরে ধীরে এর মাধ্যমে আরও বেশি সংখ্যক কর্মী প্রশিক্ষিত হয়ে উঠবে বলে প্রত্যাশা করি।

সিবাই সভাপতি আতিকুর ইসলাম বলেন, পোশাক খাতে দৃশ্যমান চ্যালেঞ্জ ছাড়াও অনেক লুপ্ত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।

আইএলও’র পোগ্রাম অফিসার খাদিজা খন্দকার বলেন, ডেনিম ও নিটওয়্যার খাতে দক্ষ কর্মী তৈরিতে সিবাই কাজ করছে। ইতোমধ্যে সিবাই থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রায় এক হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। সংগঠনটি প্রতিবন্ধীদের দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতেও কাজ করছে।

প্রশিক্ষণ নিয়ে বীকনগ্রুপে কাজ পাওয়া আরেফিন আক্তার বলেন, অনেক ফ্যাক্টরির দরজায় দরজায় ঘুরেছি। সবাই ফিরিয়ে দিয়েছে। আমার এক বোনের কাছ থেকে শুনে সিবাই ট্রেনিং সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ পেয়েছি।

প্রতিবন্ধী শিরিন আক্তার ছয় বছর ধরে তারাসিমা গ্রুপে কাজ করছেন। তাকে কাজ দেয়ায় প্রতিষ্ঠানটির প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি।

সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি (সিবাই) সিইও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আফতাব উদ্দীন আহমদ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে পোশাকশিল্প কারখানায় দক্ষ শ্রমিকের অভাব আছে। এখন পর্যন্ত সিবাইয়ের অধীনে (১০ টি কারখানার শ্রমিক) প্রশিক্ষণ শেষে ছয় হাজার শ্রমিক বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কাজ করছে।