Logo

নিরাপত্তা ইস্যুতে ৩০ লাখ গার্মেন্ট শ্রমিকের ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ

Fazlul Haque
মঙ্গলবার, জুলাই ২৬, ২০১৬
  • শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট : সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা ইস্যুতে সারা দেশের পোশাক কারখানার প্রায় ৩০ লাখ শ্রমিকের তথ্য যাচাই-বাছাই করে ডাটাবেজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজিএমইএ। সংগঠনটির সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সামপ্রতিক জঙ্গি হামলার পর দেশের ও পোশাক শিল্পের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতারা। ওই বৈঠকে কারখানায় যাতে কোনো ধরনের হামলা অথবা অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা না ঘটে সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পোশাক শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের তথ্য যাচাই-বাছাই করে একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার বা ডাটাবেজ করা হবে। সবার আগে অগ্রাধিকার পাবে বিজিএমইএ সদস্য কারখানাগুলো। এর পর ধীরে ধীরে বিকেএমইএসহ পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট রপ্তানিমুখী অন্য কারখানাও এই ডাটাবেজের আওতায় আসবে। এতে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ আছে কিনা, সেটি জানতে বেশ সহজ হবে। তবে এতে শ্রমিকদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মনে করে বিজিএমইএ।

নিরাপত্তার বিষয়ে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, এবার আমরা বিজিএমইএ’র মাধ্যমে ডাটাবেজ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তথ্য যাচাই-বাছাইয়ে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোকে আগে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এরপর ধীরে ধীরে বিকেএমইএসহ পোশাক রপ্তানি সংশ্লিষ্ট অন্য কারখানাগুলোকে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, সারা দেশের বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বায়িং হাউজ ও পোশাক রপ্তানি সংশ্লিষ্ট প্রায় ৫ হাজারের ওপরে কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। তিনি বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই পোশাক শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো থানায় মামলা বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কিনা, জানতেই তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছে। এতে পোশাক শ্রমিকদের ভয় পাওয়ার কারণ নেই। তিনি বলেন, মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পোশাক শিল্পের বিদেশি ক্রেতাদের এয়ারপোর্ট থেকে কারখানা পরিদর্শন পর্যন্ত নিরাপত্তা দেয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। ক্রেতাদের আশ্বস্ত করতে বিদেশি ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কারখানার মালিকদের লিখিত আকারে অবহিত করার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে।

শ্রমিক ও কর্মকর্তার তথ্য যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াটি কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাদের নিয়োগকৃত শ্রমিক ও কর্মকর্তার নাম-ঠিকানার বিস্তারিত বিজিএমইএ কার্যালয়ে পাঠাবে। পরে তাদের স্থায়ী ঠিকানা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ প্রশাসনের কাছে পাঠাবে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। এরপর তথ্য মোতাবেক পুলিশ খুঁজে দেখবে শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ আছে কিনা। থাকলে সে অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির বলেন, শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের তথ্য যাচাইয়ের বিষয়টি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত। প্রক্রিয়াটি আগে থেকেই কার্যকর ছিল। তবে সাম্প্রতিক ঘটনায় এটাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ডাটাবেজ বা তথ্যভাণ্ডারের কাজ শেষ হলে শ্রমিকদের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা কত তা জানা যাবে। তবে আনুমানিক বন্ধ কারখানাসহ প্রায় সাড়ে চার হাজার কারখানায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ শ্রমিক কাজ করেন।

এদিকে গুলশানে জঙ্গি হামলার পর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ডের প্রতিনিধিরা গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। অ্যাকর্ডের পক্ষে ছিলেন জোটের নির্বাহী পরিচালক রব ওয়েজ, এইচঅ্যান্ডএমের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা কার্ল গুনার ফেগারলিন প্রমুখ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাকর্ডের প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করে বলেন, মন্ত্রণালয় ক্রেতাদের নিরাপত্তার বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করছে। ভবিষ্যতেও এটি অব্যাহত থাকবে। ক্রেতারা বিমানবন্দরে নামার পর থেকে কারখানা পরিদর্শনসহ সব ধরনের চলাফেরায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা পাবেন। বিজিএমইএ এই সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে। সুত্র : দৈনিক মানবজমিন