Logo

পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ

RMG Times
রবিবার, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
  • শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক পোশাক কারখানায় বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধিতে বৈষম্য এবং শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও অবস্থান ধর্মঘট করেছে। শ্রমিক অসন্তোষের মুখে রবিবার পর্যন্ত দু’দিন কারখানা বন্ধ ঘোষনা করেছে কর্তৃপক্ষ।

কারখানা শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রাস্থিত মাহমুদ জিন্স লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের প্রতিবছর বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি করা হয় মুল বেতনের সর্বনিম্ন ৩% থেকে ৫% হারে। কিন্তু এবছর জনপ্রতি শ্রমিকের বেতন মোট ১০০-৩০০ টাকা বৃদ্ধি করে কর্তৃপক্ষ।

এ নিয়ে বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধিতে অনিয়ম হওয়ার অভিযোগ তুলে গত কয়েকদিন ধরে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। বেতন বৃদ্ধিতে বৈষম্যের প্রতিবাদ করায় ৪ ডিসেম্বর কারখানার ১৩ জন শ্রমিককে ছাটাই করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এর জের ধরে শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধিতে বৈষম্য এবং শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে শনিবার সকাল হতে কারখানায় অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় আন্দোলনে বাধা দেওয়ায় শ্রমিকদের সঙ্গে কয়েক কর্মকর্তার কথা কাটাকাটি হয়।

এক পর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা কয়েক কর্মকর্তার উপর হামলা চালায়। এতে কারখানার ম্যানেজার সোহেল ও প্রোডাকশন ম্যানেজার সুশান্তসহ চার কর্মকর্তা আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে মৃদু লাঠি চার্জ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এসময় কয়েক শ্রমিক আহত হয়। বিকেলে কর্তৃপক্ষ কারখানা একদিনের ছুটি ঘোষনা করলে কারখানা এলাকা ত্যাগ করে।

এঘটনার পর রবিবার সকালে শ্রমিকরা যথারীতি কাজে যোগ দেওয়ার জন্য কারখানার গেইটে এসে জড়ো হয়। এসময় তারা কারখানার গেইট তালাবদ্ধ ও গেইটে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এসময় তারা গেইটের সামনে অবস্থান নিয়ে অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ করতে থাকে।

একপর্যায়ে তারা কারখানার পার্শ্ববর্তী ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এসে সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে শ্রমিকদের বুঝিয়ে তাদেরকে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রবিবার সন্ধ্যায় কর্তৃপক্ষ সোমবার হতে কারখানা চালু করার ঘোষণা দিলে আন্দোলনরত শ্রমিকরা কারখানা এলাকা ত্যাগ করে।

কারখানার সিনিয়র ব্যবস্থাপক (মানব সম্পদ ও প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম জানান, এ কারখানায় প্রায় ৩হাজার ৭শ’ শ্রমিক রয়েছে। শ্রম আইন অনুসারেই শ্রমিকদের এবছরের ইনক্রিমেন্ট (বাৎসরিক বেতন) শতকরা ৯দশমিক ৬৩ থেকে বাড়িয়ে ৯ দশমিক ৭৫ করা হয়েছে। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে একটু ভূল বোঝাবুঝি হয়েছে। শ্রমিকদের হামলায় চার কর্মকর্তা আহত হয়েছে। সোমবার হতে কারখানা পুনঃরায় চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

শিল্প পুলিশ গাজীপুর-১ এর ইন্সপেক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধিতে বৈষম্য এবং শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা রবিবার মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। এসময় শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।