ডেস্ক রিপোর্ট: রফতানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকের উৎসে কর আরও কমে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হচ্ছে। সহজভাবে বলা যায়, কোনো পোশাক কারখানা পণ্য রফতানি করে ১০০ টাকা আয় করলে এর বিপরীতে এখন থেকে সরকারকে কর দিতে হবে শূন্য দশমিক ২৫ টাকা। এর আগে দিতে হতো শূন্য দশমিক ৬০ টাকা। অর্থাৎ আগের চেয়ে কর কমছে ৫৮ শতাংশ।
এনবিআর সূত্র জানায়, তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কর কমানোর নীতিগত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করবে। সংশ্নিষ্টরা জানান, পোশাক খাতে নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের ফলে আরেক দফা কর কমানো হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব এরই মধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের অপেক্ষায় আছে।
এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে শিগগির আদেশ জারি করে তা কার্যকর করবে এনবিআর। সরকার আশা করছে, নতুন করে কর কমানোর প্রস্তাব কার্যকর হলে পোশাক শিল্পে চাপ কমবে এবং শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন সহজ হবে। এতে পোশাক শিল্পে স্বস্তি ফিরে আসবে। এনবিআর সূত্র বলেছে, শুধু পোশাক খাতের জন্য উৎসে কর কমানো হলেও অন্যান্য খাতের করহার আগের মতোই থাকছে।
সর্বশেষ, পোশাক খাতে উৎসে কর কমানো হয়েছিল গত সেপ্টেম্বরে। তখন ১০০ টাকায় উৎসে কর ১ টাকা থেকে ৬০ পয়সা (০.৬০ শতাংশ) নির্ধারণ করা হয়। পোশাক কর্মীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য আরেক দফা কর কমানোর দাবি করেছে বিজিএমইএ। এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বিজিএমইএ বলেছে, শ্রমিকদের বর্ধিত মজুরি দিতে হলে পোশাক মালিকদের ওপর আর্থিক চাপ বাড়বে। কর কমানো না হলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের নীতিগত অনুমোদনের পর এনবিআর কর কমানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। গত সপ্তাহে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেন অর্থমন্ত্রী।
১ ডিসেম্বর থেকে পোশাক খাতের ন্যূনতম মজুরি কার্যকর করেছে সরকার। এর পরিমাণ মাসিক ৮ হাজার টাকা, যা আগে ছিল ৫ হাজার ৩০০ টাকা। নতুন বেতন কাঠামোতে গড়ে বেতন বাড়ল প্রায় ৫১ শতাংশ।
বিজিএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির সমকালের বরাত দিয়ে বলেন, বর্তমানে পোশাক খাত নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে। ইউরোপ-আমেরিকায় অন্যসব কিছুর দাম বাড়লেও তৈরি পোশাকের দাম বাড়ছে না। এ অবস্থায় আরও উৎসে কর কমানো হলে এ খাতে চাপ কমবে।
এর আগে গত নভেম্বরের শেষে রফতানিমুখী শতভাগ পোশাক শিল্পের পরিবহন ব্যয়, তথ্যপ্রযুক্তি সেবা, সিকিউরিটি সার্ভিস, ল্যাবরেটরি টেস্টসহ বিভিন্ন সেবায় মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়। এর ফলে পোশাক খাতের খরচ আরও কমবে বলে সংশ্নিষ্টরা মনে করেন।
মতামত লিখুন :