Logo

অগ্নি নিরাপত্তায় বাংলাদেশি পোশাক কারখানার ব্যাপক অগ্রগতি

Fazlul Haque
রবিবার, এপ্রিল ১৭, ২০১৬
  • শেয়ার করুন

ফজলুল হক, নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১২ সালে বাংলাদেশের পোশাক খাতের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নি দুর্ঘটনার শিকার হয় তাজরিন ফ্যাশন। সেই থেকেই যেন এক অকল্পনীয় দুর্যোগ নেমে আসে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে যা ভয়াবহ আকার ধারণ করে ঠিক এক বছর পরেই পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কারখানা দুর্ঘটনা রানা প্লাজার ধ্বস। এ যেন শুধু রানা প্লাজার ধ্বস নয়, এই ঘটনা ছিল এক বিশাল মানবিক বিপর্যয়। দেশের মানুষ, সরকার, উদ্যোক্তা, শ্রমিক সবাই যখন শোকে মূহ্যমান ঠিক একই সাথে বিশাল চাপ আসতে থাকে ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতা ও ভোক্তা পর্যায় থেকে। ডিজনি সহ কয়েকটি বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে পোশাক না কেনার ঘোষণা দেয়।জাতীয় অর্থনীতি যেখানে পোশাক খাতের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল সেখানে এসব ব্র্যান্ডের বাংলাদেশি পোশাকের প্রতি অনীহা যেন আমাদের দ্রুত উন্নয়নশীল জাতীয় অর্থনীতির উপর দিয়ে এক বিষাক্ত বাতাস বয়ে যায়।

শুরু হয় বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনা। আসে ব্র্যান্ড এর তত্ত্বাবধানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নের প্রস্তাব। অনেক আপত্তিকর শর্ত থাকা সত্ত্বেও সেদিন আমাদের পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট সকলে এবং সরকার বাধ্য হয় Accord ও Alliance গঠনের প্রস্তাব মেনে নিতে। যাত্রা শুরু করে এই দুটি উদ্যোগ। শুরু হয় অগ্নি নিরাপত্তা, স্থাপনা নিরাপত্তা ও বিদ্যুৎ বিষয়ক নিরাপত্তা নিয়ে চুলচেরা পরিক্ষা নিরিক্ষা। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের বাইরে গিয়ে চাপানো হয় এনএফপিএ শর্তাবলী। বয়সে কিশোর এই দেশের পোশাক শিল্প এই তো সেদিনের। এখনও নবিন বলা যায়। সম্পূর্ণ উদ্যোক্তা নির্ভর এই শিল্প তেমন কোন পৃষ্ঠপোষকতা পায় নি বললেই চলে। অনেকটা হেসে খেলেই যেন আজ রুপ নিয়েছে দ্বিতীয় বৃহৎ পোশাক রপ্তানীকারক দেশে। দেশি বিদেশি শর্ত পুরণ করতে যেন ঘাম ঝরতে থাকে কারখানা মালিক ও কর্মকর্তাদের। এদিকে খরচ বাড়লেও খুব কম ক্রেতা আছেন যারা দাম বাড়িয়েছেন পোশাকের বরং বিপদের সুযোগ নিয়ে দরকষাকষি করেছেন আরও বেশি। আজকের এই দিনে প্রায় তিন বছরের কঠোর শ্রমে আমাদের কারখানাগুলোর অগ্নিঝুকি অনেকটা নিয়ন্ত্রনে চলে এসেছে।

আলায়েন্সের রিপোর্টে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বরাত দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে অগ্নি দুর্ঘটনা ৯০ শতাংশ কমে এসেছে। ২০১৫ সালে ছোট ছোট ৩০ টি অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোন প্রানহানি ঘটেনি যেখানে শুধুমাত্র ২০১২ সালেই প্রায় ২৫০ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় প্রাণ হারায় ১১৫ জন শ্রমিক।

প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখন ভাল বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত প্রকাশ করেছেন।