Logo

‘আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় মালিকরা শ্রমিকদের সাথে বাড়াবাড়ি করেছে’- রাশেদ খান মেনন

RMG Times
শুক্রবার, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৬
  • শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট : ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, আশুলিয়ার গার্মেন্টস শ্রমিকরা কোনো বাড়াবাড়ি করে নি, মালিকরা বাড়াবাড়ি করেছে। কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের উপর দোষ চাপিয়েছে। তিনি বলেন, এমপি মন্ত্রীদের বেতন বেড়েছে, শ্রমিকদের জীবন নির্বাহের ব্যয় বেড়েছে। এই ব্যয় মেটাতে শ্রমিকরা দিশেহারা। এ কারণে শ্রমিক পথে বের হয়েছে। শেষে মালিকরা বাধ্য হয়ে কারখানা খুলে দিয়েছে। এটা ষড়যন্ত্র নয়, এটা ন্যায়।

 

শুক্রবার প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ১৫তম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি আমিরুল হক আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান প্রমুখ।

রাশেদ খান মেনন বলেন, শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধি করতে হবে। মালিকদের বলেন, আপনারা শুধু শ্রমিকদের সাথে পারেন, বায়ার সাথে পারেন না। কারওয়ার বাজারের ওই বড় ভবনে বসে আনন্দ-উত্তেজনা করেন। আর শ্রমিকদের কিভাবে শোষণ করতে পারেন সে পরিকল্পনা করেন। কিন্তু বায়ারদের কাছে থেকে পণ্যের বেশি দাম নিতে পারেন না। তাদের কথা মত ব্যাংকক পর্যন্ত চলে যেতে পারে আলোচনা বসার জন্য। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শ্রমিকদের মজুরি ৫৭০ টাকা ছিল। এখন ৫৩০০ টাকা হয়েছে। এগুলো শ্রমিকদের আন্দোলনের ফসল। যারা বলেন এটা দয়া করে বাড়িয়েছে। তাদের প্রতি অনুরোধ তাহলে শ্রমিকদের জীবন নির্বাহের যে ব্যয় বেড়েছে তা কমান। পণ্যের দাম কমান।
শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশে মেনন বলেন, যারা শ্রমিকদের কারখানার বাইরে বের করেছিল তারাই আবার শ্রমিকদের কারখানায় ঢোকানোর জন্য মন্ত্রীর কাছে ছুটে এসেছিল। তারা এটা ঠিক করেনি। এটা তারা পারে না। কারণ আন্দোলন আন্দোলন খেলা করার পরিনতি ভাল হয় না।

নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, বেতন বৃদ্ধির কোন প্রস্তাব না দিয়েই শ্রমিকরা আন্দোলনে বের হয়ে ঠিক করেনি। আশুলিয়ায় মজুরি বৃদ্ধির নামে জ্বালাও পোড়াও করেছে। এটা ঠিক করেনি। সরকার প্রথমে এ সব শ্রমিককে গ্রেফতার করতে চায়নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন, বিধি বিধান মেনে আন্দোলন না করলে আন্দোলন সফল হবে না।

মন্ত্রী বলেন, ৫ বছরের আগে বেতন বৃদ্ধি করতে বোর্ড গঠনের সুযোগ নেই। তবে আমরা শিগগির মালিকদের সাথে বসে মজুরি ‘রিভিউ’ করার ব্যবস্থা করবো। মালিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অকারণে শ্রমিক ছাটাই করবে না, গ্রেফতার করবেন না কোন সমস্যা হলে শ্রমিকদের সাথে কথা বলে সমস্যার সমাধান করুন।

পেটে ক্ষুধা না লাগলে শ্রমিকরাপথে বের হয় না বলে উল্লেখ করেন ডা, ওয়াজেদুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে শ্রমিকদের নাভিশ্বাস উঠেছে। এ জন্য শ্রমিকরা সরকার এবং মালিক সমিতির কাছে মজুরি বৃদ্ধির দাবিনামা দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় শ্রমিকরা আশুলিয়ায় কর্মসূচি দিয়েছিল। এ আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া শ্রমিকদের অন্য কোন পথ খোলা ছিল না। ন্যায্য হিস্যার জন্য তারা আন্দোলনে গেছে। মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান এই শ্রমিক নেতা।

মজুরি বৃদ্ধি, পেশাত গত নিরাপত্ব ও পোশাক কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন বাধা দূর করার দাবি জানান আমিরুল হক আমিন।