নিজস্ব প্রতিনিধি : পোশাক খাতের মেয়েদের স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যসচেতনতা, পরিবার পরিকল্পনা, এমআরের মতো বিভিন্ন বিষয়ে মালিক ১ টাকা খরচ করলে তার বিপরীতে ১৩ টাকার লাভ পেতে পারেন। পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে মেরি স্টোপসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ফুলকি পোশাক খাতের শ্রমিকদের ওপর গবেষণা করে এই তথ্য পেয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলামোটরের প্ল্যানার্স টাওয়ারে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ও বিকেএমইএ আয়োজিত এক কর্মশালায় ফুলকির পক্ষ থেকে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
বলা হয়, নারীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পোশাক কারখানায় কাজ করে। তাদের নিজেদের স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলো নিয়ে তারা খুব একটা সচেতন নয়। অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করতেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না। কিন্তু ভেতরে ভেতরে বিভিন্ন রোগে ভোগে। তাদের এমআরের মতো বিষয়, পরিবার পরিকল্পনা, স্যানিটেশন, ডে কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যগত বিষয়ে যদি ট্রেনিং করানো যায় তাহলে তারা স্বাস্থ্যগত দিক থেকে ভালো থাকবে। কাজেও মনোযোগ আসবে। বেশ কয়েকটি গার্মেন্ট মালিক এ বিষয়গুলোতে কাজ করে ভালো সুবিধা পাচ্ছে। তাদের উৎপাদন আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। সবগুলো বিষয় মিলিয়ে দেখা গেছে, কেউ যদি শ্রমিকদের এই ধরনের সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে ১ টাকা খরচ করে তাহলে সেখান থেকে ১৩ টাকার মুনাফা পায় তারা।
নেদারল্যান্ডসের আর্থিক সহযোগিতায় ফুলকি এখন পর্যন্ত নিরাপদ-২ প্রকল্পের আওতায় ৩০ হাজার মহিলা (পোশাক শ্রমিক ও প্রত্যন্ত গ্রামের নারী) ও ২০ হাজার পুরুষকে স্বাস্থ্যসচেতনতা বিষয়ে ট্রেনিং প্রদান করেছে। এছাড়া ফুলকির নিরাপদ-২ প্রকল্পের আওতায় ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরে শ্রমিকদের জন্যে ফ্যামিলি প্ল্যানিং কর্নার করা এবং বিনামূল্যে/ সুলভ মূল্যে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি(বড়ি, কনডম) এবং তথ্য প্রদান, স্বল্প মূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদান, স্যাটেলাইট ক্লিনিক স্থাপন, রেফারেল লিঙ্কেজ যার মাধ্যমে শ্রমিকরা নিকটস্থ মেরী স্টপস ক্লিনিক /স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ৫০% বিশেষ ছাড়ের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা গ্রহণসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবে।
এর আগে নিরাপদ প্রকল্প নামে আরেকটি প্রজেক্টের অধীনে আরো ৬০ হাজার নারী ও ৩০ হাজার পুরুষকে ট্রেনিং প্রদান করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহবুবুল আলম প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, পিছিয়ে থাকা নারীদের কাছে কখন সন্তান নিতে হবে, স্বাস্থ্যের সঠিক পরিচর্যা কিভাবে করতে হবে, কিভাবে ফ্যামিলি প্ল্যানিং করতে হবে, জন্ম নিয়ন্ত্রণে কী করতে হবে, এমআর করতে হবে কিভাবে—এসব তথ্য পৌঁছে দিতে হবে। এগুলো তাদের রি-প্রডাকটিভ অধিকার।
বিকেএমইএর সেকেন্ড ভাইস প্রেসিডেন্ট মনসুর আহমেদ বলেন, ডে কেয়ার, স্বাস্থ্যসচেতনতা, ‘ফ্যমিলি প্ল্যানিং, সেফ এমআরের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। এতে আমাদের উত্পাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
ফুলকির নির্বাহি পরিচালক সুরাইয়া হকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডিরেক্টর অব ফাইন্যান্স প্রণব কুমার নিয়োগী। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডস অ্যাম্বাসির প্রথম সেক্রেটারী অ্যানি ভেস্তইয়েন্স।
মতামত লিখুন :