Logo

নয় মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশ, শুধু পোষাক খাতের রপ্তানি আয় ২০.৪৪ বিলিয়ন ডলার

Fazlul Haque
বুধবার, এপ্রিল ৬, ২০১৬
  • শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, আরএমজি টাইমস : চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে; এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ শতাংশ বেশি।দেশি মুদ্রায় যা ২ হাজার ৪৯৫ কোটি ৫২ লাখ । এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি।

3ac57ddffc81506b77c7be7da98e9dee-13

সর্বশেষ মার্চ মাসেও এর আগের বছরের মার্চের চেয়ে আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ২ শতাংশ। মঙ্গলবার প্রকাশিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণেও তৈরি পোশাকের উপর ভর করে আয় বাড়ার তথ্য মিলেছে।

অর্থবছর শেষে এবার রপ্তানি খাতে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যবে বলে প্রত্যাশা করছেন অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত এবং তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ২ হাজার ৪৯৫ কোটি ৫২ লাখ (২৪.৯৫ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে।

এর মধ্যে ২ হাজার ৪৪ কোটি (২০.৪৪ বিলিয়ন) ডলারই এসেছে তৈরি পোশাক থেকে।  অর্থাৎ মোট রপ্তানির ৮২ শতাংশই এসেছে এই খাত থেকে।

এই সময়ে রপ্তানির মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৪৪৪ কোটি (২৪.৪৪ বিলিয়ন) ডলার।

গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এই নয় মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশের আয় ছিল ২ হাজার ২৯০ কোটি ৪৭ লাখ (২২ দশমিক ৯০ বিলিয়ন) ডলার। এ হিসাবে জুলাই-মার্চ সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ২ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি আয় এসেছে।

মাস হিসেবে মার্চ মাসে ২৮৩ কোটি ১৪ লাখ ডলার রপ্তানি আয় দেশে এসেছে। গত বছরের মার্চে যার পমিাণ ছিল ২৫৯ কোটি ২৮ লাখ ডলার। মার্চ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ২৮২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এই মাসে ৯ দশমিক ২ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে।

Capture

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, পোশাক খাতের ২ হাজার ৪৪ কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের মধ্যে ওভেন পোশাক থেকে এসেছে ১ হাজার ৭৬ কোটি ডলার। আর নিট পোশাকের অবদান ৯৬৭ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। ওভেন পোশাকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৬৪ এবং নিটে ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

এই নয় মাসে নিট পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ। উভেনে বেড়েছে ১২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। উভেনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। নিটে প্রবৃদ্ধি হয়নি; লক্ষ্যমাত্রার প্রায় সমান আয় হয়েছে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক জায়েদ বখত বলেন, “এখন তৈরি পোশাকের ভরা মৌসুম চলছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ সব দেশেই তৈরি পোশাকের চাহিদা। সে কারণেই রপ্তানি আয় বাড়ছে।

অর্থবছরের বাকি তিন মাসও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলেই তার আশা।

দেশে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি রপ্তানি আয় বাড়াতে সহায়তা করেছে বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত।

রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের কণ্ঠেও এল একই ভাষ্য। তিনি বলেন, “প্রতি মাসেই রপ্তানি আয় বাড়ছে। অর্থবছরের বাকি তিন মাসেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। এবার আমাদের পোশাক রপ্তানিতে ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হবে।”

বিজিএমইএর সহসভাপতি আরও বলেন, নতুন গ্যাস-সংযোগ না পাওয়ায় অনেক কারখানা উৎপাদন শুরু করতে পারছে না। গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি ও সংযোগ স্থানান্তরের জন্য আবেদন করেও পাচ্ছে না অনেকে। তিনি বলেন, প্রায় ২০০ কারখানা গ্যাসের জন্য বসে আছে। কারখানাগুলো চালু হলে ১২০ কোটি ডলার পোশাক রপ্তানি বেশি হতো।

সব মিলিয়ে রপ্তানি বাণিজ্যে ইতিবাচক ধারা ‘বইছে’ বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।

“বর্তমান এই পরিবেশ অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের যে লক্ষ্য আমরা ঘোষণা করেছি তা অর্জন সম্ভব হবে।”