নিজস্ব প্রতিবেদক : ইউরোপের বাজারে প্রথম স্থান দখল করেছে বাংলাদেশের ডেনিমস (জিন্স পণ্য)। অল্প সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও তৃতীয় স্থান দখল করেছে ডেনিমস। এ কারণে এ খাতে উদ্যোক্তাদের ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ইউরো স্টেটের তথ্য মতে, ২০১৫ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৪ হাজার ৬৫১ মিলিয়ন ইউরোর ডেনিম পণ্য আমদানি করে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। এরমধ্যে বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার ১৭৬ মিলিয়ন ইউরোর ডেনিম পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ২০১৪–তে ৯৩৯ মিলিয়ন, ২০১৩–তে ৮০৮ মিলিয়ন, ২০১২–তে ৭২৫ মিলিয়ন, ২০১১–তে ৫৯১ মিলিয়ন এবং ২০১০ সালে ৪৪৪ মিলিয়ন ইউরোর ডেনিম পণ্য রপ্তানি হয়েছে ইউরোপে।
বাংলাদেশের পরের অবস্থানে রয়েছে তুরস্ক। এরপরের স্থানে যথাক্রমে রয়েছে পাকিস্তান ও চীন। এ চার দেশের মধ্যে পাকিস্তানের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৩১ শতাংশ। ডেনিমস উৎপাদন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ডেনিম বা জিন্স পণ্য রফতানি খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। যমুনা, পারটেক্স ও এনভয়ের মতো স্বনামধন্য ২৮টি প্রতিষ্ঠান ইউরোপ–আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডেনিম রপ্তানি করে দেশের সুনাম বয়ে আনছে।
এছাড়া রপ্তানিকে উৎসাহিত করতে এবং বিদেশী ক্রেতাদের বাংলাদেশের ডেনিম পণ্য সম্পর্কে অবহিত করতে একাধিক প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন করছে। বিশ্ববাজারে চাহিদা থাকায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী ডেনিমের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। এ পণ্যের কোনো নির্দিষ্ট মৌসুম নেই। ১২ মাসই রপ্তানি হয়। ছোট–বড় সব শ্রেণী–পেশার মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে জিন্স। এ কারণে সারা বছরই এ কাপড়ের ডিমান্ড থাকে। এরইমধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাজার দখল করতে পেরেছে। এতে আগ্রহী হয়ে বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠান ডেনিম উৎপাদনে এগিয়ে আসছে।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপ অঞ্চলে ডেনিম রপ্তানিতে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে কম্বোডিয়া। ২০১০ সালে দেশটির রপ্তানি ছিল মাত্র ৬ মিলিয়ন ইউরো। সেখানে তারা ২০১৫ সালে ১৭৬ মিলিয়ন ইউরো রপ্তানি করেছে। এর আগের বছরের তুলনায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৪ শতাংশ। প্রতি বছরই তাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
অন্যদিকে ইউএস আইটিসির (ইউনাইটেড স্টেটস ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশন) তথ্য মতে, ২০১৫ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ৩ হাজার ৬৯৯ মিলিয়ন ডলারের ডেনিম পণ্য আমদানি করে, যা আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ কম। একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ডেনিম রপ্তানিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে চীন ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মেক্সিকো।
আমরা আশা করি, ইউরোপের পথ ধরে বাংলাদেশের ডেনিমস রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রেও সেরার আসনটি দখল করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের যেমন আরও উদ্যোগী হতে হবে, তেমনি জ্বালানির উচ্চমূল্য, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহারসহ আরও কিছু সমস্যার সমাধানে সরকারের আন্তরিকতাও প্রয়োজন। সূত্র: বাংলাদেশীজম
মতামত লিখুন :