Logo

গোয়েন্দা তালিকায় ২০০ গার্মেন্টস কারখানা

RMG Times
বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৬
  • শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট : কোরবানির ঈদের আগে বেতন-বোনাস নিয়ে সঙ্কট হতে পারে-এমন কারখানার তালিকা করেছে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। এ তালিকায় ২০০টির অধিক কারখানার নাম রয়েছে। সম্প্রতি তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএকে এ তালিকা দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে সরকারি ওই সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে। গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সঙ্কট সমাধানেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিজিএমইএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে সড়ক, যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অনুরোধে আসন্ন কোরবানির ঈদের আগে তিন ধাপে গার্মেন্টস কারখানা ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতারা। গত সপ্তাহে ওবায়দুল কাদের আশুলিয়া এলাকার সড়ক পরিদর্শনে গিয়ে গার্মেন্টস মালিকদের দুই ধাপে কারখানা ছুটি দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন, যাতে ঈদের আগে রাস্তায় যানজট তৈরি না হয়। তার সে আহ্বানে সাড়া দিলেন গার্মেন্টস মালিকরা।

এ বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, যোগাযোগমন্ত্রী দুই ধাপে ছুটি দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। তার অনুরোধের প্রতি সম্মান রেখে আমরা আরও এক ধাপ বাড়িয়ে তিন ধাপে গার্মেন্টস কারখানা ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঈদের আগে তিন ধাপে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়া হবে গার্মেন্ট কারখানা। তবে এক দিনেই নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় ছুটি নয়, বেতন-বোনাস প্রদান সাপেক্ষে এবং শিপমেন্ট হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কারখানাগুলো এই তিন দিনে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়া হবে। আশা করব এতে সবাই উপকৃত হবেন।

বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, তিন ধাপে ছুটি দেওয়ার বিষয়ে মালিকদের নির্দেশনা সম্বলিত একটি পরিপত্র গতকাল বিজিএমইএ থেকে সব সদস্য কারখানা মালিকের কাছে ই-মেইলে পাঠানো হয়েছে। ‘ঈদ উপলক্ষে শ্রমিকদের ছুটি প্রদান প্রসঙ্গে’ শিরোনামের ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে, ঈদের আগে সমন্বয় করে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পোশাক কারখানায় যেন ছুটি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে সব গার্মেন্টস কারখানা মালিকদের সহযোগিতা চাওয়া হয় বিজিএমইএর পক্ষ থেকে।

আসন্ন কোরবানি ঈদের আগে বেতন-বোনাস নিয়ে বড় কোনো সঙ্কট হবে না বলে মনে করছেন গার্মেন্টস মালিকরা। তবে ছোট ও মাঝারি বেশ কিছু কারখানায় সঙ্কট দেখা দেবে। আর এ রকম দুই শতাধিক কারখানার তালিকা করেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা-ডিজিএফআই এবং শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে বিজিএমইএতে। আশুলিয়া, সাভার, গাজীপুর এলাকাতেই এসব কারখানা বেশি রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে আমরা সেগুলো যাচাই-বাছাই করছি। এর পাশাপাশি বিজিএমইএর পক্ষ থেকেও বিষয়টি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যেসব কারখানায় সমস্যা রয়েছে সেসব কারখানার মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে এবং কার কী ধরনের সমস্যা সেগুলো নির্ধারণ করে কীভাবে সমস্যা সমাধান করা যায় আমরা সে চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে এবারের ঈদের আগে পোশাকশিল্পে বেতন-বোনাস নিয়ে কোনো সঙ্কট হবে না। তবে এতবড় একটি শিল্প খাতে ছোট-খাটো সমস্যা থাকতেই পারে। আমরা এসব ছোট সমস্যা সমাধান করব। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যেই অনেক কারখানা মালিক বোনাস দেওয়া শুরু করেছেন। আমার কারখানাতেও বৃহস্পতিবার (আজ) বোনাস প্রদান করব। এভাবে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী ঈদের ছুটির আগেই বেতন-বোনাস দেওয়া হবে।
এদিকে ঈদের আগে গার্মেন্টস খাতের বেতন-বোনাস প্রদানসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে স্বরাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পৃথক বৈঠক ডাকা হয়েছে। আজ সকালে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে এবং দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিজিএমইএর নেতারা ছাড়াও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

সার্বিক বিষয় সম্পর্কে শ্রমিক নেতা ও জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, আসন্ন ঈদের আগে বেশ কিছু গার্মেন্টস কারখানার বেতন-বোনাস নিয়ে সঙ্কট দেখা দেবে। শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা এসব কারখানা মনিটরিং করছি। আমরা চাইব, প্রত্যেক গার্মেন্টস শ্রমিক যেন বেতন-বোনাস নিয়ে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে যায়। মালিকদের প্রতি আমাদের অনুরোধ ঈদের আগে সব কারখানায় যেন বেতন-বোনাস দেওয়া হয়।

সৌজন্যে : দৈনিক সকালের খবর