Logo

আরএমজি টাইমস সত্যের কান্ডারী হোক, ভালোর কারিগর হোক

RMG Times
মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭
  • শেয়ার করুন

শেখ আলমগীর হোসেন, সিইও এন্ড ডিরেক্টর (এম.আর.এফ গ্রুপ) : একান্ন কোটি এক লক্ষ পাঁচশ বর্গ কিলোমিটারের এই বিশাল পৃথিবীর অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটি দেশ, আমাদের বাংলাদেশ। গুগল ম্যাপের স্বাভাবিক আকৃতির মধ্যে এই দেশটিকে খুজে পেতে কয়েক গুন জুম করতে হয়। তার পর কয়েকটি রেখা দেখা যায় মাত্র, যা বাংলাদেশের মানচিত্র। খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই দেশটির নাম বা অবস্থান বিশ্বের বহু মানুষের কাছেই অজানা থাকবে। কিন্তু সে ধারনা অতীত হয়েছে, হচ্ছে ক্রমশ। যতগুলো অর্জন এ দেশ কে বিশ্বের মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে তার অন্যতম বাংলাদেশের পোশাক শিল্প। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন মানুষের শরীরে লেগে থাকে আমার দেশের নাম। আমাদের থেকে হাজার হাজার মাইল দুরের কোন একটা প্রত্যন্ত গ্রামের কোন একজন মানুষকে প্রচন্ড শীতের মধ্যে উষ্ণতা দিচ্ছে যে কাপড় সেই কাপড়ের মধ্যেই ছোট্ট আরেক টুকরো কাপড়ে লেখা রয়েছে “মেইড ইন বাংলাদেশ”! এ আমাদের অত্যন্ত আবেগের বিষয়, অত্যন্ত আনন্দের বিষয়! এই আবেগ আমাদের যেমনি গর্বিত করে তেমনি সমৃদ্ধ করে আমাদের অর্থনীতি। এ কথা আমরা সকলেই জানি, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটেছে তার দাবিদার হিসেবে এ শিল্পের পাল্লা একক ভাবে অনেক ভারি। এক সময় এ দেশের মানুষকে অনাহারে থাকতে হয়েছে, অর্ধাহারে থাকতে হয়েছে, অপুষ্টিতে ভুগতে হয়েছে। কিন্তু সে চিত্র বর্তমানে পাল্টেছে। তিন বেলা খাবার এখন আমাদের জোটে, অন্তত জোটানোর রাস্তা রয়েছে। সেও কম তৃপ্তির নয়! হাজার হাজার কারখানাতে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক, কর্মকর্তা কর্মচারি কাজ করছে। এত বড় একটা শিল্পের এত বড় পরিবারের তো অসংখ্য গল্প থাকবেই। সে গল্প তাদের ভাল লাগার গল্প, ভালবাসার গল্প, সফলতার গল্প, ব্যার্থতার গল্প, সহযোগিতার গল্প, আত্মতৃপ্তির গল্প, আশঙ্কার গল্প ইত্যাদি। যে শিল্প আমাদের অর্থনীতি, আমাদের আবেগের সাথে এতখানি সংশ্লিষ্ট সে শিল্প সম্পর্কে আমাদের কৌতুহল, আমাদের জানার আগ্রহ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এই আগ্রহ আমাদের মৌলিক সহজাত প্রবৃত্তি।
ঠিক আমাদের সেই প্রবৃত্তি মেটানোর উদ্দেশ্যে আজকে থেকে ৩৬৫ দিন আগে যখন সূর্য থেকে পৃথিবীর অবস্থান আজকের মতো একই জায়গায় ছিল তখন এ দেশের একজন অত্যন্ত মেধাবী তরুণ একটি ঘটনা ঘটিয়ে ফেললেন। সেই তরুণ জনাব আব্দুল আলীম। তার হাত ধরেই জন্ম নিল শুধু পোশাক শিল্প বিষয়ক অনলাইন নিউজ পোর্টাল আর.এম.জি টাইমস। পোশাক শিল্পের পরতে পরতে লেগে থাকা গল্প গুলোকে সবার সামনে তুলে ধরার জন্যে আরএমজি টাইমস পরিবারের সদস্য সংখ্যা বাড়তে থাকল। এই একটি বছরে আমি নিজের চোখে দেখেছি এই পরিবারের অক্লান্ত শ্রম আর নিরন্তর প্রচেষ্টা।

প্রকৃত অর্থে এই শিল্প সংশ্লিষ্ট মানুষের কথা, ঘটনার কথা বলার জন্য এ রকম একটি উদ্যোগ প্রচন্ড দরকার ছিল। পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটা দেশে সব থেকে সম্ভাবনাময়ী খাত নিয়ে একটি মন্ত্রনালয় থাকে। আমাদের ও ছিল। যেমন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়। কিন্তু বর্তমানে যে শিল্পটি সব থেকে বেশি সম্ভাবনাময়ী সেই খাত কে দেখভাল করার জন্য কোন নির্দিষ্ট মন্ত্রনালয় নেই।  বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয় এ ক্ষেত্রে কিছুটা প্রাসঙ্গিক হলেও তাদের ভূমিকা অপর্যাপ্ত।  বানিজ্য মন্ত্রনালয় কিছুটা দৌড়াদৌড়ি করলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এ রকম একটি পরিবেশে এ দেশের পোশাক শিল্প খাতের ভাল মন্দ নিয়ে আলোচনা, জনসচেতনতা ও জনমত গড়ে তোলা এবং দেশের বাইরে এই শিল্প খাতটি সম্পর্কে ইতিবাচক প্রচারে আর.এম.জি টাইমস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

মাত্র একটি বছরে পত্রিকাটির অর্জন ও নেহাত কম নয়। অসংখ্য মানুষের ভালবাসা যেমনি পেয়েছে তেমনি তুলে আনতে পেরেছে অসংখ্য ঘটনা। পত্রিকাটি শুধু যে সংবাদ প্রকাশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে তাও নয়। বন্যার্তদের পাশে দাড়িয়েছে, ত্রাণ দিয়েছে, আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজনের দায়িত্ব পালন করেছে, শিক্ষামূলক কর্মসূচীর পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। এ রকম অজস্র সুন্দর কাজের মাধ্যমে একটি বছর পার হয়েছে।

হাটি হাটি পা পা করতে করতে কৈশোরে পৌছাক, তারুণ্যের জোয়ারে প্লাবিত হোক, সত্যের কান্ডারী হোক, ভালোর কারিগর হোক কিন্তু কখনও যেন বার্ধক্য না ছুতে পারে!এই একটি বছর হাজার বছরে পরিণত হোক।
আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ভালবাসা প্রকাশ করছি। শুভ জন্মদিন আর.এম.জি টাইমস!