নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের শিল্পায়নের জন্য বেসরকারি খাতের উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘বেসরকারি খাত যত শক্তিশালী ও দ্রুততর হবে দেশের শিল্পায়নের গতি তত বেগবান হবে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘শিল্প উন্নয়নে রাষ্ট্রপতি পদক’ বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বেসরকারি খাত ও উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এসএমই খাতে উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের প্লট দেয়া হয়। রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কারও তাদের উৎসাহকরণের একটি অংশ।
টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব শিল্পায়নের লক্ষ্য অর্জনে সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে বলে জানান আবদুল হামিদ।
‘এক কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রপ্তানি আয় চার হাজার কোটি মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। সেজন্য এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের অধিকাংশ প্লট ব্যক্তিগত উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ করা হচ্ছে’ যোগ করেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি উল্লেখ করেন, কর অব্যাহতি এবং বিনিয়োগকারীদের প্রতি অন্যান্য সরকারি উৎসাহদানে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সবুজ শিল্পায়ন বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, এটি সম্ভব হয়েছে কারণ সরকার একটি স্বপ্নদর্শী ও উদ্যোক্তা-বান্ধব নীতি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। দেশ গার্মেন্টস, চামড়া, জাহাজ নির্মাণ, সাইকেল, জাহাজ ভাঙা শিল্পের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া কিছু শিল্প যেমন সিরামিক, প্লাস্টিক, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক পণ্য এখন বিশ্বমান অর্জন করেছে এবং বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখায় ছয়টি বিভাগে ১৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
বৃহৎ শিল্প বিভাগে প্রথম পুরস্কার অর্জন করে নারায়ণগঞ্জের ফারিহা স্পিনিং মিল। এছাড়া স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড দ্বিতীয় এবং এনভয় টেক্সটাইল লিমিটেড তৃতীয় হয়।
মাঝারি শিল্প বিভাগে বিআরবি পলিমার লিমিটেড প্রথম, চট্টগ্রাম ডেনিম মিলস লিমিটেড দ্বিতীয় এবং বসুমতি ডিসট্রিবিউশন লিমিটেড তৃতীয় স্থানের পুরস্কার পায়।
ক্ষুদ্র শিল্প বিভাগে বিজয়ী হয় ময়মনসিংহের রানার অটোমোবাইলস, গাজীপুরের অকো-টেক্স লিমিটেড এবং আবুল ইন্ডাস্ট্রিজ।
এছাড়া নতুন অন্তর্ভুক্ত মাইক্রো-শিল্প বিভাগে একমাত্র পুরস্কার পেয়েছে স্মার্ট লেদার প্রোডাক্টস।
হাই-টেক বিভাগে পুরস্কার দেয়া হয় নারায়ণগঞ্জের সুপার স্টার ইলেকট্রিক্যাল এক্সেসোরিজ লিমিটেড এবং ঢাকার সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেডকে।
কুটির শিল্প বিভাগে একমাত্র পদক পেয়েছে কারুপণ্য বয়ন কারখানা।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, শিল্প সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব, পুরস্কার বিজয়ী শিল্প ইউনিটের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতিকে একটি সম্মানসূচক ক্রেস্ট উপহার দেন শিল্পমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে শিল্পপতিদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ফারিহা স্পিনিং মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির হোসেন।
প্রসঙ্গত, উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করণ, উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতা বজায় রাখতে এবং শিল্প খাতে সামগ্রিক অবদানকে উৎসাহ প্রদানে ২০১৩ সাল থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ‘শিল্প উন্নয়ন পদক’ দিয়ে আসছে।
মতামত লিখুন :