Logo

বাণিজ্য মেলা: গ্রীন টেকনোলজীতে সুদৃশ্য প্যাভিলিয়ন করছে ওয়ালটন

RMG Times
শনিবার, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭
  • শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৮ সালের প্রথম দিনই শুরু হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) ২৩তম আসর। যা কিনা দেশের সর্ববহৎ পণ্য মেলা হিসেবে পরিচিত। এবারের মেলাতেও দৃষ্টিনন্দন তিন-তলা প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন তৈরি করছে দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। প্যাভিলিয়ন নির্মাণে অনুসরণ করা হচ্ছে গ্রীন টেকনোলজী মেথড। বিপুল পরিমান ক্রেতা দর্শনার্থীর চাপ মোকাবেলায় নেয়া হচ্ছে সম্ভাব্য প্রস্তুতি।

নিজস্ব কর্মকর্তার পাশাপাশি অর্ধ-শতাধিক এক্সিবিটর নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দেশী-বিদেশী ক্রেতা-দর্শনার্থীদের কাছে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটনের প্রযুক্তি পণ্য তুলে ধরতে তাদেরকে দেয়া হয়েছে উচ্চতর প্রশিক্ষণ।

রাজধানীর আগারগাঁও শেরে বাংলা নগরীতে অনুষ্ঠিতব্য মেলার প্রস্তুতি পুরোদমে এগিয়ে চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মেলার রাস্তা-ঘাট, মূল প্রবেশদ্বারসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে মেলার যৌথ আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো’র দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। পিছিয়ে নেই মেলায় বরাদ্দকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তুতি। দিন-রাত কয়েকশ শ্রমিক কাজ করছেন। বিশেষ করে, ওয়ালটনসহ মেলায় অংশ নেয়া বেশিরভাগ দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্যাভিলিয়ন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে।

মেলার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের (নম্বর-২৬) সমন্বয়ক শাহ শহীদ চৌধূরী জানান, প্যাভিলিয়ন নির্মাণের ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাইরের কাঠামোর কাজ প্রায় চুড়ান্ত। চলছে অভ্যন্তরীণ সাজ-সজ্জার কাজ।

তিনি বলেন, প্রযুক্তি পণ্যে ওয়ালটন দেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড। যে কারনে ওয়ালটনের প্রতি সবার একটি বাড়তি আকর্ষণ থাকে এবংয় সবাই পণ্য কিনতে বা দেখতে আসেন। একসঙ্গে যাতে অনেক ক্রেতা-দর্শনার্থী প্রবেশ এবং বের হতে পারে সেজন্য ১১ ফুট চওড়া প্রবেশদ্বার করা হচ্ছে। শারীরিকভাবে অসুস্থ বা প্রতিবন্ধী ক্রেতা-দর্শণার্থীরা যাতে সহজে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে প্রবেশ করতে পারে সেজন্য র‌্যাম্প সিঁড়ির (ধাপ বিহীন) ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। বরাবরের মতো এবারও নিচতলা থেখে দ্বিতীয় তলায় উঠার সুবিধার্থে থাকছে অত্যাধুনিক সুপরিসর লিফট। পাশাপাশি থাকবে ৭ ফুট চওড়া সিঁড়ি।

ওয়ালটনের ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিভাগের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার শাদী মোহাম্মদ রুম্মান জানান, ৭ হাজার ৫’শ বর্গফুট আয়তনে দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলয়ন তৈরি করছে তারা। নির্মাণ কাজে অনুসরণ করা করছে গ্রীন টেকনোলজী মেথড। নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় শক্ত স্টিলের কাঠামোর ওপর করা হচ্ছে প্যাভিলিয়নের পুরো স্থাপনা। ইন্টেরিয়র ডেকোরেশনে ব্যবহার করা হচ্ছে ফায়ার রেসিস্ট্যান্ট এসিপি (এ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল) বোর্ড, গ্লাস এবং স্টিলের ফ্রেম। থাকবে পর্যাপ্ত পরিমাণে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র। ব্যবহৃত বোর্ড এবং স্টিলগুলোর ফায়ার রেসিস্ট্যান্ট ক্ষমতা অনেক বেশি। ব্যবহৃত ম্যাটেরিয়ালস মেলা শেষে দীর্ঘস্থায়ী কাঠামো নির্মাণেও কাজে লাগবে। স্টিল ও এসিপি বোর্ডগুলোর ৯০ শতাংশই পরবর্তীতে ব্যবহারযোগ্য।

বাণিজ্য মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক (পিআর অ্যান্ড মিডিয়া) মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, এবারের মেলায় ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগান তুলে ধরতে এক্সিবিটরদের প্রোডাক্ট ক্যাটাগরি অনুযায়ী কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে ৫-দিনব্যাপী উচ্চতর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। যেখানে করপোরেট বিহ্যাবিয়ার, কালচার ও ক্রেতা-দর্শণার্থীদের সর্বোত্তম সেবা প্রদান সম্পর্কে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তাদের।

তিনি আরো বলেন, ওয়ালটন পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান দিতে তাদের ঘুরে দেখানো হয়েছে ওয়ালটনের নিজস্ব হাই-টেক পার্ক। যা কিনা মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শণার্থীদের সামনে দেশীয় পণ্যের উচ্চমান ও অন্যান্য বিশেষত্ব সম্পূর্ণভাবে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের প্রদর্শন ও বিক্রি হবে আকর্ষণীয় ডিজাইন ও সাশ্রয়ী মূল্যের ল্যাপটপ, এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন, রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এলইডি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন, ইলেকট্রিক ও মাইক্রোওয়েব ওভেন, ইন্ডাকশন কুকার, ব্লেন্ডারসহ কয়েক শতাধিক মডেলের বিশ্বমান সম্পন্ন ইলেকট্রনিক্স হোম এ্যাপ্লায়েন্সেস। থাকছে এলইডি বাল্ব, সুইচ, সকেট, রিচার্জেবল ব্যাটারি, জেনারেটরসহ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস।

উল্লেখ্য, সেরা ভ্যাটদাতার পুরস্কার চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিবছর মেলায় সেরা ভ্যাটদাতার সম্মান পাচ্ছে ওয়ালটন। এছাড়া প্রায় প্রতিবছরই সেরা প্যাভিলিয়নের পুরস্কার পেয়ে আসছে ওয়ালটন।

ইপিবি সূত্রমতে, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিলিয়ে এবারের বাণিজ্য মেলায় মোট ৫৪০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। বাংলাদেশ ছাড়াও ১৭টি দেশ অংশ নিচ্ছে। এগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, ভিয়েতনাম, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল ও হংকং।