Logo

‘পোশাক রপ্তানির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে অ্যাকর্ড ও এ্যালায়েন্স’

RMG Times
বুধবার, নভেম্বর ১, ২০১৭
  • শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর চাপ সৃষ্টির জন্যই অ্যাকর্ড ও এ্যালায়েন্সের তদারকি।

৩০ অক্টোবর সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ আয়োজিত দু’দিনব্যাপী ব্যবসা ও অর্থনীতি বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রথমদিনে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য বিনিয়োগে বাংলাদেশের লক্ষ্য নির্ধারণের প্রতিবন্ধকতা ও নীতিমালা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেন।

অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর ক্রেতাদের সকল শর্ত পূরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এরপরও ক্রেতারা অ্যাকর্ড ও এ্যালায়েন্স দিয়ে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।’

তিনি বলেন, দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে গ্রিন ফ্যাক্টরিতে রূপান্তর করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল বিশ্বের যে ১০টি তৈরি পোশাক কারখানাকে এনার্জি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন (এলইইডি) সার্টিফিকেট দিয়েছে, তার মধ্যে প্রথম, দিতীয় ও তৃতীয়সহ ৭টি ফ্যাক্টরিই বাংলাদেশের।

তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘রূপকল্প-২০২১’ সফল করতে সরকার দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন প্রায় ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করছে। এর প্রায় ৮১ ভাগ আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে।’

তিনি বলেন, ২০২১ সালে দেশের মোট রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আসবে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ কারণেই আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর এত চাপ।

আন্তর্জাতিক রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশ পেপারলেস ট্রেড করার সক্ষমতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো এখন নিরাপদ ও কর্মবান্ধব। এজন্য ব্যবসায়ীরা বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছেন, কিন্তু পোশাকের দাম বাড়েনি বরং ইউরোর অবমূল্যায়নের ফলে মূল্য কম পাওয়া যাচ্ছে। অথচ পণ্যের রপ্তানি সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘১৯৯০ সালে শিশু শ্রমের অভিযোগ আনা হয়েছিল, ২০০৫ সালে কোটা প্রথা বাতিল করা হয়েছিল। বাংলাদেশ সফলভাবে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করে এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে শতভাগ ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি খাতে ৭ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতে ৩৫ শতাংশ কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন নেই।’

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এলডিসিভুক্ত (স্বল্পোন্নত) দেশ হিসেবে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে ডিউটি ও কোটা ফ্রি রপ্তানি বাণিজ্য সুবিধা পাবার কথা। ইউরোপিয়ন ইনিয়নসহ অনেক উন্নত দেশ এ সুবিধা প্রদান করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে এ সুবিধা দেয় না। ডিউটি দিয়ে বাংলাদেশ সেখানে রপ্তানি বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় বাজার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। বৈঠকে সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। বৈঠকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলংকা, অস্ট্রেলিয়াসহ ১৩ টি দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।