ডেস্ক রিপোর্ট : গাজীপুরের সদর উপজেলার শিশিরচালা এলাকায় শ্রমিক আন্দোলনের মুখে লিথি শিল্প গোষ্ঠীর অ্যাপারেল-২১ লিমিটেড নামের একটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। গার্মেন্ট বন্ধের নোটিশ দেখে রবিবার সকালে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। পরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শ্রমিকদের ভাষ্যমতে, বুধবার দিবাগত রাতে কারখানার সুইং অপারেটর সোহাগ ওরফে সুমনকে ছাঁটাই করার খবরে সে প্রতিবাদ করলে কর্তৃপক্ষের মদদে কারখানার ভেতরেই সুমনকে মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদ করতে যান সুমনের অপর সহকর্মী আব্দুর রহমান। এতে বৃহস্পতিবার সকালে কারখানা কর্তৃপক্ষ মালিক পক্ষের স্থানীয় কিছু লোকজন তাদের কারখানা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়।
রবিবার সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করতে এসে কারখানার মূল ফটক বন্ধ দেখতে পান এবং আশেপাশে পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে। এসময় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় মালিকের পক্ষের কয়েকজন বহিরাগত লোকজন শ্রমিকদের উপর হামলা চালায়। এসময় কারখানার শ্রমিক জরিনা, রিনা, নাসিমাসহ কয়েকজন আহত হয়। আহতদেরকে স্থানীয় বাঘের বাজারের কাজি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম জানান, শ্রমিকদের অব্যাহত আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ কারখানার প্রধান ফটকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ টানিয়ে দেয়। রবিবার সকালে শ্রমিকরা বন্ধের নোটিশ দেখে কারখানার ফটকের সামনে অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা পাশের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধের জন্য রওনা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা কমান্ডার এসএম আলতাফ হোসেন বি.এন (অব.) জানান, ‘কর্তৃপক্ষকে কিছু না জানিয়ে বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, শ্রম অধিদপ্তর, শিল্প পুলিশ ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের আহ্বান জানালে শ্রমিকরা তাতে রাজি না হয়ে গত ১১ ও ১২ অক্টোবর কারখানায় ভাঙচুর ও কর্মবিরতি অব্যাহত রাখে। যা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ প্রেক্ষিতে শ্রম আইনানুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহমুদ হাসান জানান, সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ১০জনের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। অল্প সময়ে এর সমাধান হবে।
মতামত লিখুন :