২২৭৫ কারখানায় জরিপ চালিয়ে ২ শতাধিক কারখানাকে চিহ্নিত করেছে কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর শ্রমিক নেতারা বলছেন, আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্বও অধিদপ্তরের
রিয়াদ হোসেন : শ্রম আইন অনুযায়ী, প্রতি মাসের প্রথম ৭ কার্যদিবসের মধ্যে গার্মেন্টস কারখানায় শ্রমিকদের পূর্বের মাসের বেতন পরিশোধ করতে হবে। গার্মেন্টস কারখানার কমপ্লায়েন্সে (কর্মপরিবেশ) সম্প্রতি বেশ অগ্রগতি হলেও এক্ষেত্রে ঘাটতি রয়ে গেছে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই) গত বছর ২ হাজার ২৭৫টি কারখানায় জরিপ চালিয়েছে। তাতে দেখা গেছে, এখনো ২ শতাধিক কারখানা নিয়মিত মজুরি পরিশোধ করে না। তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও এ দুটি সংগঠনের সদস্য নয় – এমন ২ হাজার ২৭৫টি কারখানার সার্বিক কমপ্লায়েন্সের উপর গত বছরব্যাপী জরিপ কাজটি চালানো হয়। এর মধ্যে এক হাজার ৩৩৫টি বিজিএমইএ’র ও ৪৪৬টি বিকেএমইএ’র সদস্য কারখানা। বাদবাকী ৪৯৪টি কারখানা কোন সংগঠনের সদস্য নয়, কিন্তু তারাও রপ্তানির জন্য পোশাক তৈরি করে।
ডিআইএফই সূত্র জানিয়েছে, নিয়মিত মজুরি দেয়ার দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে মূলত সংগঠনের সদস্য নয় – এমন কারখানাগুলো। এ তালিকায় থাকা ৪৯৪টি কারখানার মধ্যে প্রায় ১শ’ কারখানাই নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে পারে না। অর্থাত্ মোট কারখানার ২০ শতাংশ এ তালিকায় রয়েছে। বিজিএমইএ’র সদস্য ১ হাজার ৩৩৫টি কারখানার মধ্যে এ ধরণের সমস্যা রয়েছে ৬৭টি কারখানার। অন্যদিকে বিকেএমইএ’র ২৭টি কারখানা নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে ব্যর্থ।
গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বলছেন, নিয়মিত বেতন দেয় না এমন কারখানার সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে আরো বেশি হবে। কেননা প্রতি মাসের প্রথম সাত কার্যদিবসের মধ্যে মজুরি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলেই তা অনিয়মিত তালিকায় পড়ে যায়।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিল্স) এর সহকারি নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডিআইএফই’র দায়িত্ব কেবল প্রতিবেদন তৈরি করা নয়। বরং যারা নিয়মিত মজুরি দিচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। দায়ী কারখানা কোন সংগঠনের সদস্য হোক কিংবা না হোক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ডিআইএফইকে নিতে হবে। যদি কোন আইনগত ব্যবস্থা না নেয়া হয়ে থাকে তাহলে ডিআইএফই নিজেই আইন ভঙ্গ করেছে।
অবশ্য তিনি বলেন, এ প্রতিবেদন যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে বলা যাবে, নিয়মিত মজুরি দিচ্ছে না – এমন কারখানার সংখ্যা অতীতের তুলনায় কমে আসছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি এখনো বিশ্বের যে কোন দেশের চাইতে কম। এত কম মজুরি নিয়মিত দিতে সমস্যা হলে অবাকই হতে হয়।
মালিকপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ঠিকাভিত্তিতে বা সাবকণ্ট্রাকটিংয়ে কাজ করে এমন ছোট ও মাঝারি আকারের কারখানাই নিয়মিত মজুরি দিতে ব্যর্থ হয়। এর বাইরে কিছু কারখানা মালিক অভ্যাসগত কারণেও মজুরি দিতে দেরি করেন। সৌজন্যে : দৈনিক ইত্তেফাক
মতামত লিখুন :