ডেস্ক রিপোর্ট : শ্রমিকদের পাওনা না দিয়েই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাজধানীর মালিবাগে অবস্থিত এসএইচবি গার্মেন্টস। আগে থেকে কোনো নোটিশ ছাড়াই আকস্মিকভাবে কারখানা বন্ধ করায় ক্ষোভে ফুসে উঠেছে সেখানে কর্মরত ৮শ` শ্রমিক। দাবি আদায়ে বুধবার কাওরান বাজারে গার্মেন্টস শিল্প মালিক সমিতি (বিজিএমইএ) ভবন ঘেরাও করে তারা।
জানা গেছে, শ্রমিকদের জুন মাসের অর্ধেক বেতন ও ঈদের বোনাস এবং নোটিশ না দিয়ে কারখানা বন্ধের কারণে শ্রমিক আইন অনুযায়ী ৩ মাসের বেতনের দাবিতে বিকাল ৩টা থেকে বিজিএমইএ`র সামনে অবস্থান নেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে বুধবার বিকাল ৫টায় মালিক পক্ষ, শ্রমিক নেতা ও সমিতির নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে মালিক পক্ষ শুধু গত জুন মাসের বকেয়া ১৫ দিনের বেতন ও ঈদের বকেয়া অর্ধেক বোনাস দিতে সম্মত হয়। এতে শ্রমিকরা আরো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং সন্ধ্যার পর বিজিএমইএ ভবন অবরোধ করে রাখেন। বাঁশের বেরিকেড দিয়ে বিজিএমইএ ভবন থেকে বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেন। এ সময় কিছু শ্রমিক উশৃঙ্খল হয়ে উঠলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অ্যাকর্ডের (শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণকারী সংগঠন) শর্ত পালনে ব্যর্থ হয়ে হয়ত কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছে মালিক পক্ষ। তবে যে কারণেই হোক শ্রমিকরা তাদের সব পাওনা বুঝে পাবেন। এ ব্যাপারে মিটিংয়ে সব পক্ষের কথা শুনে আইনানুগ ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে কারখানা বন্ধে ক্ষুব্ধ শ্রমিক নেতা ও কারখানার সুইং অপারেটর সুমন বলেন, পঙ্কজ দেবাদত এর মালিকানার ওই কারখানায় কর্মরত সব শ্রমিককে ঈদের আগে ২৪ জুন অর্ধেক বেতন ও বোনাস দিয়ে ৯ দিনের ছুটি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ছুটি শেষে গত ৪ জুলাই কারখানায় এসে দেখা যায় কারখানার প্রধান ফটকে বন্ধের নোটিশ ঝুঁলছে। এসএইচবি-১, এসএইচবি-২ ও এসএইচবি-৩ মোট তিনটি কারখানায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে কারখানা বন্ধে চরম হতাশায় পড়েছেন বলে জানান সুমন। সামনে ঈদুল আযহার আগে কর্ম হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন কারখানার অন্য শ্রমিকরাও।
কারখানার অপর শ্রমিক নেত্রী নাহার বলেন, হঠাৎ কেন মালিক কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে তা জানি না। তবে আমরা গরিব মানুষ আমাদের একদিন কাজ না হলে খাব কি? তাই নতুন কাজ নিয়ে কতদিন যে অন্যের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে তাই ভাবছি। তিনি বলেন, জুন মাস চলে গেছে আমরা এ মাসের এখন অর্ধেক বেতন পাই। নিজেদের মাসিক বেতনও পেলাম না আবার কাজও হারালাম। ঈদের পর হাতও খালি, কোনো টাকা কাছে নেই। এ অবস্থায় চিন্তায় আছি।
অন্য শ্রমিক নেতা শাওন বলেন, বিকেল ৫টায় বিজিএমইএ ভবনে এসোসিয়েশন নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারা আমাদের দাবি মানছে না। তাও আমরা অপেক্ষা করছি এবং আলোচনায় আসার চেষ্টা করছি। প্রথমে অবস্থান নিয়েছিলাম। তারপর দাবি না মানার কারণে শেষ পর্যন্ত ভবনের সামনের এ রাস্তা অবরোধ করেছি। তারপরও যদি কিছু না হয় আগামীকাল বৃহস্পতিবার মালিবাগ চৌধুরী পাড়ায় কারখানার সামনে অবরোধ হবে। আমরা আমাদের দাবি আদায়ে যা যা করণীয় তা করবো।
এ ব্যাপারে একাধিকবার এসএইচবি গার্মেন্টসের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মোবাইলে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
– ইটিভি অনলাইন
মতামত লিখুন :