ফজলুল হক, নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে নীট প্লাস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার ভল্ট ভেঙে তিন কোটি ৪১ লাখ টাকা ডাকাতি করা ডাকাত চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। রবিবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে এক কোটি ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জম, ট্রাক ও পোশাক কারকানার মেশিনারিজ উদ্ধার করা হয়েছে।’ সোমবার সকালে র্যাবের কারওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘নীট প্লাস গার্মেন্টসে ডাকাতির পর আমরা ছায়া তদন্ত শুরু করি। ঘটনার দিন ছয় নিরাপত্তাকর্মীর মধ্যে চারজনকে অচেতন করা হয়। বাকি দুই নিরাপত্তাকর্মী নিখোঁজ ছিল। এরপর আমরা তাদের ঘিরে তদন্ত শুরু করি। কিন্তু নিখোঁজ দুই নিরাপত্তাকর্মী যে ঠিকানা দিয়ে চাকরি নিয়েছিলেন তা ভুয়া। তাদের একজনের প্রকৃত নাম মাহবুবুর রহমান কিন্তু গার্মেন্টসে তার নাম ছিল আব্দুল খালেক মিয়া। অপরজনের প্রকৃত নাম ফারুক হোসেন তবে সে চাকরি নিয়েছিল আলম শিকদার নাম দিয়ে। আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হই তারা দুজন ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। এরপর প্রথমে খুলনা থেকে মাহবুবুর রহমানকে গ্রফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের গ্রেফতার করা হয়। বাকি গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলো- ফারুক হোসেন ওরফে আলম শিকদার, খলিলুর রহমান রানা, বেলায়েত হোসেন আকন্দ, ইকবাল হোসেন রুবেল ও উজ্জল বিশ্বাস।’
তিনি আরও বলেন, ‘মূলত মাহবুবুরের নেতৃত্বেই ডাকাতি হয়। এই চক্রটি এর আগেও বাড্ডার একটি গার্মেন্টসে ডাকাতি করেছে। তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও রয়েছে। চক্রটি একটি সিকিউরিটি এজেন্সিতে ও পরে গার্মেন্টসে নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি নেয়। এরপর তারা পরিকল্পনা করে ডাকাতি করে।
সংবাদ সম্মেলনে মুফতি মাহমুদ খান আরও জানান, ডাকাতরা ৮ জানুয়ারী ২০১৭ তারিখে রাত ১.১৫ ঘটিকা থেকে রাত ৩.৩০ ঘটিকা পর্যন্ত ডাকাতি করে; ঐ স্থানেই ভাগাভাগি করে একাধিক ব্যাগে ভরে টাকা নিয়ে যারা যার মতো গোপন আশ্রয়ে চলে যায়। আসামীদের স্বাকীরোক্তি অনুযায়ী লুন্ঠিত টাকা ভাগাভাগিতে মাহবুবুর রহমান ৭০ লক্ষ২৬ হাজার টাকা ও ১০ হাজার ইউএস ডলার; ফারুক হোসেন ৭০ লক্ষ টাকা ও ২ হাজার ইউএস ডলারস; খলিলুর রহমান রানা ৭০ লক্ষ টাকা ও ১০ হাজার ইএস ডলার, বেলায়েত হোসেন ৫০ লক্ষ টাকা ও এক হাজার ইউএস ডলার এবং ইকবাল হোসেন ৬০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও ২ হাজার ইউএস ডলারসহ সর্বমোট ৩ কোটি ৪০ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা লুট ভাগাভাগি করে নেয়। আসামীরা জানায়, এর আগে একাধিক বার ডাকাতি করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
মতামত লিখুন :