নিজস্ব প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে নিরাপত্তাকর্মীদের অচেতন করে দুর্বৃত্তরা গত রবিবার নীট প্লাস লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতনের প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা লুট করে নেয়ার ঘটনায় দুই নিরাপত্তা কর্মীকে খুঁজছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। কর্তৃপক্ষের দাবী কারখানার ঐ দুই নিরাপত্তাকর্মীর সহায়তায় দুর্বৃত্তরা ওই টাকা লুটে নিয়েছে।
কারখানার সিনিয়র ম্যানাজার (কমার্শিয়াল ডিপার্টমেন্ট) মো. হারুন অর রশিদ বলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকাস্থিত নীটপ্লাস লিমিটেড কারখানায় প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কর্মরত আছে। এসব শ্রমিকদের বেতন ভাতা দেওয়ার পুর্বনির্ধারিত তারিখ ছিল রবিবার। শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য একটি বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে ২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। পরে ওই টাকা কারখানার ৮তলা ভবনের নিচ তলায় একটি সিন্দুকে রাখা হয়। ওই সিন্দুকে আরও ৬১ লাখ ৫১ হাজার টাকা ছিল। সব মিলিয়ে ওই সিন্দুকে মোট ৩ কোটি ৪০ লাখ ৫১ হাজার টাকা রাখা ছিল। কারখানার ছয়জন নিরাপত্তাকর্মীর মধ্যে একজন রবিবার ভোর রাতে তার ৫ সহকর্মীকে জানায় এবারের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় তার সন্তান জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ উপলক্ষে সে অপর একজন নিরাপত্তা কর্মীর সহায়তায় বাকী চার নিরাপত্তা কর্মীকে পানীয় পান করায়। পানীয় পান করে ওই চার নিরাপত্তা কর্মী অচেতন হয়ে পড়ে। এসময় নিরাপত্তাকর্মী আলম সিকদার ও আঃ খালেকের সহযোগীতায় কয়েক দুর্বৃত্ত ওই টাকা লুট করে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে এ দুই নিরাপত্তা কর্মী পলাতক রয়েছে। এদিকে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা লুটের খবর পেয়ে কারখানার কর্মকর্তগণ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ এঘটনা পুলিশকে জানিয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে কাউকে আটক বা লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধার করতে পারে নি। কারখানার সিসিটিভিতে টাকা লুট করে নেয়ার দৃশ্য ধরা পড়েছে।
চারজনকে চেতনা নাশক দ্রব্য খাইয়ে ও বাকি দু’জন নিরাপত্তাকর্মী আলম সিকদার ও আঃ খালেকের সহযোগিতায় অজ্ঞাত কয়েকজন লোক টাকাগুলো লুট করে পালিয়ে যায়। এছাড়া আমাদের সিসি টিভিতেও লুটের কিছু ফোটেজ পাওয়া গেছে। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা কারখানা পরিদর্শন করেন।
এ ঘটনায় একাউন্ট ম্যানেজার মারুফ আবু জামশেদ বাদী হয়ে পলাতক দুই নিরাপত্তা কর্মী আলম সিকদার ও আঃ খালেকসহ অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনের নামে কালিয়াকৈর থানায় ঐ দিনই একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামী আব্দুল খালেক মিয়া বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার হানুয়া গ্রামের বাসিন্দা ও আলম সিকদার পটুয়াখালি জেলার বাউফল থানার ৬ নং কনকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর থানার ওসি আব্দুল মোতালেব মিয়া বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মামলার সুত্র ধরে পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। পলাতক দুইজন নিরাপত্তাকর্মীকে খুঁজছে পুলিশ। তবে এখনো পর্যন্ত এঘটনায় জড়িত কাউকে আটক বা লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধার করা যায় নি।
মতামত লিখুন :