নিজস্ব প্রতিনিধি : অর্ধশতাধিক কারখানার শ্রমিকরা মঙ্গলবারও কাজ বন্ধ করে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিক্ষোভ শুরু করেন। নুন্যতম মজুরী ১৫ হাজার টাকার দাবীতে টানা কয়েকদিনের শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চল। শ্রমিক অসন্তোষ রুপ নিয়েছে শ্রমিক বিক্ষোভে।
আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এদিকে আশুলিয়ার ৫৫টি তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণার কথা জানিয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তৈরি পোশাক মালিকদের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। এর ফলে কারখানা বন্ধ থাকার সময় বেতন পাবেন না শ্রমিকেরা।
আশুলিয়ায় শ্রমিকদের বিক্ষোভরত শ্রমিক ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত কয়েকদিনের মতো মঙ্গলবার সকালেও শ্রমিকরা কারখানার ভেতর প্রবেশ করে ন্যূনতম ১৫ হাজার টাকা বেতনের দাবিসহ ১৬ দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা কারখানার ভেতর বিক্ষোভ শুরু করলে শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবারের মতো ছুটি ঘোষণা করে।
এদিকে একে একে প্রায় অর্ধশতাধিক কারখানা ছুটি ঘোষণা করলে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার কয়েক হাজার শ্রমিক আব্দুল্লাপুর-বাইপাইল মহাসড়কে নেমে আসে। এসময় তারা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে দেয়। উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো শিল্পাঞ্চল এলাকা। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠাতে ব্যর্থ হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের লক্ষ করে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও লাঠিচার্জ করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, দাবি আদায়ের জন্য কারখানার ভেতরে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলেন তারা। তবে কয়েকদিন যাবৎ কারখানা কর্তৃপক্ষ ছুটি দিয়ে তাদের কারখানা থেকে বের করে দিচ্ছে। এ কারণে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পুলিশ তাদের ওপর গুলি ছুড়ে আন্দোলন বন্ধ করে দিয়েছে। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান শ্রমিক বিক্ষোভের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও ওই এলাকার অর্ধশতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে যেকোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওইসব কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে।
মতামত লিখুন :