বিবিসি : ২০১৮ সালের মধ্যে গার্মেন্টস খাতে রপ্তানিতে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলতে চাইছে ভারত। এ লক্ষ্যে দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গত বুধবার একটি বিশেষ প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। যাতে ২০১৮ সালের মধ্যে অন্তত ৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বস্ত্র ও পোশাক বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ ৪০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করতে পারবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে।
দেশটির মন্ত্রিসভা যে বিশেষ প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে, তাতে বলা হচ্ছে বস্ত্র আর পোশাক শিল্পে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। বিভিন্ন ধরনের কর ছাড় আর বিনিয়োগের সুবিধাও দেওয়া হবে। বিভিন্ন রাজ্য সরকার যে লেভি আদায় করে, সেগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হবে গার্মেন্টস শিল্প মালিকদের। এজন্য কোষাগারে বাড়তি ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বোঝা চাপবে। ভারতীয় বস্ত্র শিল্পকে বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতায় সাহায্য করার জন্য এই বাড়তি অর্থ খরচ করতেও পিছপা হবে না সরকার।
ইউ এন কমট্রেড-এর পরিসংখ্যান দেখিয়ে ভারত সরকার বলছে, ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আর ভিয়েতনামের চেয়ে বস্ত্র ও তৈরি পোশাক রপ্তানিতে এগিয়ে ছিল ভারত।
কিন্তু তারপর থেকেই এই শিল্পে রপ্তানির পরিমাণ কমতে থাকে। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ আর ২০১১ সালে ভিয়েতনামের চেয়ে বস্ত্র রপ্তানিতে পিছিয়ে পড়ে ভারত। ২০১৪ সালে ভারত মাত্র ১৭ বিলিয়ন ডলারের বস্ত্র ও তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পেরেছিল। যেখানে বাংলাদেশ থেকে ২৬ বিলিয়ন আর ভিয়েতনাম থেকে ২১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বস্ত্র ও পোশাক বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এই নতুন প্যাকেজ নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজন্টেশন করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, উন্নতমানের যন্ত্রপাতি বসানোর জন্য ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হবে। এই ভর্তুকি পেয়ে যাতে সত্যিই তা কাজে লাগানো হয়, সেটা নিশ্চিত করতে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হওয়ার পরেই এই অর্থ দেওয়া হবে কোম্পানিগুলোকে।
আয়কর ছাড়, নারীদের বস্ত্র আর পোশাক শিল্পে আরো বেশি করে নিয়োগ দেওয়ার মতো ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে নতুন প্যাকেজে। যদি এই প্যাকেজ ঠিকমতো কাজে লাগানো যায়, তাহলে ২০১৮ সালে ভারত ৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বস্ত্র আর পোশাক রপ্তানি করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মতামত লিখুন :