ডেস্ক রিপোর্ট : ৫ বছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে শহিদুল ইসলাম নামের এক গার্মেন্টস মালিকের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। তৈরি পোশাক রফতানির নামে তিনি ১০০ কোটি টাকা পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাজধানীর মতিঝিল থানায় বুধবার শুল্ক গোয়েন্দার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর ১৭, ১৫/০৬/২০১৬।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সময়ে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে করা এই মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মো. শহিদুল ইসলামকে।
রাজধানীর মিরপুরের সেনপাড়া পর্বতার ঠিকানায় কারখানাটির অস্তিত্ব পাননি এনবিআর কর্মকর্তারা। মামলায় তার ঠিকানা বাড়ি ৩৪, রোড ১, সেক্টর ১২, উত্তরা, ঢাকা উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থপাচারের অভিযোগে এটিই সংশোধিত আইনে দেশের প্রথম এন্টি মানি লন্ডারিং মামলা।
মামলার এজহারে বলা হয়েছে, শহিদুলের গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানটি ২০১০ থেকে ২০১৫ মেয়াদে পাঁচ বছরে ২৯৭টি চালান বিদেশে পাঠালেও রপ্তানির বিপরীতে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনেনি।
মইনুল খান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুল্ক গোয়েন্দারা গত ডিসেম্বরে চট্টগ্রাম বন্দরে ৭টি চালানের কন্টেইনার রপ্তানি করার প্রাক্কালে আটক করে। এরপর কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখা যায় ব্যাংকের ইএক্সপি ফর্ম ও এলসি জাল করে এসব কন্টেইনার রপ্তানি করার চেষ্টা হয়েছে।
কাস্টমসের এসাইকুডা সিস্টেম থেকে গত পাঁচ বছরের হিসেব নিয়ে দেখা যায় এর আগে ২৯০টি চালানের কন্টেইনার রপ্তানি করেছে ব্যাংকের কাগজ জাল করে। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড মতিঝিল শাখা, ব্রাক ব্যাংক গুলশান শাখা এবং ন্যাশনাল ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার গ্রাহক দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এই জালিয়াতি করে। রপ্তানির শর্ত অনুযায়ী এসব রপ্তানির বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার কথা থাকলেও তা হয়নি। বরং মুদ্রা বিদেশে অন্য কোন অ্যাকাউন্টে অবৈধভাবে ট্রান্সফার করা হয়েছে। এসব কনটেইনারে নানা ধরনের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে কিন্ত পেমেন্ট বিদেশে থেকে গেছে।
ড. মইনুল খান বলেন, অবৈধ উপায়ে প্রতিষ্ঠানটি ফিলিপিন্স ও ইউএইতে পণ্যগুলো রফতানি করে। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও অর্থ মন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ সংশোধনী আইন ২০১৫ পাশের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক এই আইনে এটি প্রথম ফৌজদারি মামলা।
এই মামলাটি শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃক তদন্ত করা হবে। আদালতে প্রমাণিত হলে সর্বনিম্ন ৪ বছর ও সর্বোচ্চ ১২ বছর কারাদণ্ড হতে পারে। একইসাথে অর্থদণ্ডও হতে পারে।
মতামত লিখুন :