Logo

অগ্রগামী নারীদের ‘উইমেনস আইকন অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করলো কেয়ার বাংলাদেশ

RMG Times
বুধবার, অক্টোবর ৩০, ২০২৪
  • শেয়ার করুন


ঢাকা
, বাংলাদেশ –  ৩০ অক্টোবর, ২০২৪ – কেয়ার বাংলাদেশের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের ৮ জন অগ্রগামী নারীকে ‘উইমেন আইকন অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। ঢাকার শেরাটন হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। সমাজের প্রচলিত ধারা ভেঙে ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অনন্য ভূমিকার জন্য কেয়ার বাংলাদেশ এই নারীদের সম্মাননা প্রদান করে। এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের পূর্বে জলবায়ু কার্যক্রমে যুবশক্তির ক্ষমতায়ন বিষয়ক একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়।

কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাম দাশ তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে সকলকে স্বাগত জানান এবং বলেন “তারুণ্য শুধু আগামী দিনের জন্য নয়; তারুণ্য আজকের জন্যেও। কেয়ারের প্রতিটি স্তরে, তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে, এবং আমরা প্রতিভাবান তরুণদের আরও বেশি সংখ্যায় কেয়ারে যোগদানের আমন্ত্রণ জানাই৷ পরবর্তী দশকে আমাদের লক্ষ্য তরুণসমাজকে কেন্দ্র করে, তাদের দক্ষতা এবং সুযোগ তৈরির মাধ্যমে গড়ে তোলা যাতে তারা চাকরির বাজারে সাফল্য অর্জন করতে পারে।” অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ‘সবুজ প্রবৃদ্ধি: জলবায়ু কার্যক্রমে যুবশক্তির ক্ষমতায়ন’ শিরোনামে একটি আলোচনা সভায় বিশিষ্ট প্যানেলিস্টরা উপস্থিত ছিলেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকসুদ জাহেদী এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এবং বলেন, “তরুণরা বাংলাদেশের অদম্য বীর। সত্যিকারের ইতিবাচক প্রভাব তখনই আসবে যখন যুবরা নীতিমালায় পরিবর্তন আনবে।  চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে সম্পদ ও দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরীতে বাংলাদেশ সরকার বদ্ধপরিকর।“ এই আলোচনার ধারাবাহিকতায় বিজয়ী প্রজেক্টের অংশগ্রহণকারীদের গল্প নিয়ে “নাট্যপ্রহর” নামে একটি নাটক উপস্থাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশের পথিকৃৎ নারীদের অংশগ্রহণে ‘পরিবর্তনের অগ্রদূত হিসেবে নারী’ শিরোনামে আরেকটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের প্রথম নারী আন্তর্জাতিক দাবা মাস্টার রানী হামিদ, দেশের প্রথম এভারেস্ট জয়ী নিশাত মজুমদার, প্রথম নারী ক্রিকেট অধিনায়ক সালমা খাতুন, বাংলাদেশ বিমানের প্রথম নারী পরিচালক তাসমিন দোজা, প্রথম নারী রেল চালক সালমা খাতুন, প্রথম নারী শ্যুটার শারমিন আক্তার রত্না, প্রথম নারী গাড়ি টেকনিশিয়ান রাবেয়া সুলতানা রাব্বী, এবং কেয়ার বাংলাদেশের প্রথম নারী গাড়ি চালকদের একজন ফেরদৌসী আক্তার। আলোচনায় তারা তাদের অভিজ্ঞতা ও সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন এবং দর্শকদের সাথে মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচনার পরে কেয়ার বাংলাদেশ এই অসাধারণ নারীদের পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার তাঁর বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশে নারী আইকনদের প্রতি এই সম্মাননা কেয়ার বাংলাদেশের ৭৫ বছরের যাত্রায় নারীদের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের ধারাকেই তুলে ধরে। দেশের পরিবর্তনে নারী ও তরুণীদের ক্ষমতায়ন অপরিহার্য; ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। তরুণদের ক্ষমতায়ন থাকবে মূল প্রয়াস, কারণ বাংলাদেশের তরুণরা দেশের অর্থপূর্ণ পরিবর্তনের বাহক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে।“

নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আন্দ্রে কারস্টেনস বলেন, “একটি ন্যায়সঙ্গত এবং সমৃদ্ধ সমাজের জন্য কিশোরী-তরুণীদের ক্ষমতায়ন অপরিহার্য, কারণ জনসংখ্যার অর্ধেকাংশ সুবিধাবঞ্চিত অবস্থায় থাকলে বিশ্বের উন্নতি সম্ভব নয়। কেয়ার বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে এবং লিঙ্গ সমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এই অগ্রগামী নারীদের সাফল্যের স্বীকৃতি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য গৌরব ও অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে।”

এই অনুষ্ঠানে অর্থদাতা সংগঠনসমূহ, উন্নয়ন সহযোগী, গণমাধ্যম, বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা এবং কেয়ার বাংলাদেশের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

কেয়ার ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা একটি নেতৃস্থানীয় মানবিক সংস্থা। সংকটময় সময়ে জরুরি সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে কেয়ার-এর সাত দশকেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমাদের জরুরী কার্যক্রমসমূহ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগণ, বিশেষ করে নারীদের চাহিদার উপর অগ্রাধিকার দেয় । ২০২৩ অর্থবছরে কেয়ার বাংলাদেশ ৪৮টিরও বেশি প্রকল্পের মাধ্যমে ৫৩ লাখ (৫.৩ মিলিয়ন) মানুষের কাছে পৌঁছেছে যেখানে ৬৪% ছিল নারী এবং ব্যাপ্তির দিক থেকে সকল কেয়ার দেশগুলোর মধ্যে কেয়ার বাংলাদেশ ২য় সর্বোচ্চ অবদানকারী হিসাবে স্থান পেয়েছে।