তৈরি পোশাক শ্রমিকদের ন্যায্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা। এ জন্য নীতি-নৈতিকতার ক্রয়নীতি অনুসরণ করে পোশাকের দাম বাড়াতে ব্র্যান্ড ও ক্রেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
রোববার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। সমাবেশ থেকে ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা মজুরি বৃদ্ধির দাবি তুলে ধরা হয়। জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি শ্রমিকদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আরও বক্তব্য দেন শ্রমিক নেতা ফরিদুল ইসলাম, ফারুক খান, আলেয়া বেগম, কবির হোসেন, এইচ রবিউল চৌধুরী, রিয়াদ হোসেন, মুজাহিদুল আমিন প্রমুখ। শ্রমিক নেতারা বলেন, দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। গত পাঁচ বছরে কোনো কোনো পণ্যের দাম দ্বিগুণ-তিন গুণ হয়েছে। আবার ২০১৮ সালে ঘোষিত ৮ হাজার টাকার ন্যূনতম মজুরি ছিল ১০০ ডলারের সমান। এখন ১০০ ডলারের দর প্রায় ১১ হাজার টাকা। প্রকৃত মূল্যস্ফীতি এবং টাকার মান কমে যাওয়ার প্রভাব হিসাবে নিলে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকার বেশি হওয়া দরকার। এ হারে মজুরি নির্ধারণের সামর্থ্য মালিকদের রয়েছে। শ্রমিক নেতাদের মতে, কারখানার মালিকপক্ষ ৭ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করে থাকে। এ ছাড়া রপ্তানির বিপরীতে ১ থেকে ১০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পেয়ে থাকে তারা। এসব বিবেচনায় ২৩ হাজার টাকার ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ আমলে নেওয়া দরকার। তারা বলেন, সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী পোশাক খাতের শ্রমিকদের ‘ভিখারির মতো মজুরি’ দেওয়া যুক্তিসংগত নয়। পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিযোগী দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি অনেক কম। বাংলাদেশের পোশাক আমাদানিতে কোনো রকম আমদানি শুল্ক না থাকায় ইউরোপ, কানাডা, জাপানসহ অনেক দেশে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত করছাড় পায় ব্র্যান্ড-ক্রেতারা। মজুরির বিষয়ে তাদের পদক্ষেপও জরুরি।
ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মজুরির দাবি আদায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়ে আগামী ১৫ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে গার্মেন্টস শ্রমিকদের পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সমাবেশ থেকে।
মতামত লিখুন :