আশুলিয়া সংবাদদাতা : আশুলিয়ায় একটি তৈরী পোশাক কারখানার ভেতরে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করা ও দুপুরের খাবার বিল বৃদ্ধির দাবী নিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। গতকাল মঙ্গলবার আশুলিয়ার টংগাবাড়ী এলাকায় অবস্থিত গ্রীণ লাইফ নিট কম্পোজিত লিমিটেড নামের কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। পরে মালিকের হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হয়। শ্রমিকদের সকল দাবী মেনে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, গ্রীণ লাইফ ক্লোথিং নামে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় একই মালিকের আরেকটি পোশাক কারখানা রয়েছে। সেখানে মোবাইল নিয়ে অফিসে প্রবেশ করার অনুমতি আছে এবং দুপুরের খাবার বিল বাবদ ঐ কারখানার শ্রমিকদের দেয়া হয় মাসিক ১৭০০ টাকা। কিন্তু গ্রীণ লাইফ নিট কম্পোজিটের শ্রমিকরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। এই কারখানার শ্রমিকরা মোবাইল নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না এবং তাদের দুপুরের খাবার বাবদ দেয়া হয় মাত্র ৮৫০ টাকা। ফলে অনেকদিন ধরেই ক্ষোভে ফুসছিল নীট কম্পোজিটের শ্রমিকরা।
গতকাল মঙ্গলবার, দুজন শ্রমিক লুকিয়ে মোবাইল ভেতরে নেয়ার চেষ্টা করলে সিকিউরিটি ইনচার্জ তা ধরে ফেলে। পরে টাইম কিপারের সাথে এদের বাকবিতন্ডা হয় এবং পরে অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হয়। এই ঘটনাকে ইস্যু করে বহুদিনের জমানো ক্ষোভ প্রকাশ করে সকল শ্রমিকরা। কারখানার কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শ্রমিকরা। অফিসে মোবাইল ফোন ব্যবহার ও খাবার বিল ১৭০০ টাকা করার দাবীতে আন্দোলন করে। পরে কারখানার মালিক আবু ফয়সাল মোসাব্বের (সায়মন) সাহেবের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হয়। মালিকপক্ষ তাদের দাবী মেনে নিয়ে মঙ্গলবার কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে গ্রীণ লাইফ নীট কম্পোজিট লিমিটেড এর কমপ্লায়েন্স ম্যানেজার মশিউর রহমান আরএমজি টাইমসকে বলেন, গ্রীণ লাইফ ক্লোথিং লিমিটেড নামের কারখানাটি প্রায় দশ বছরের পুরনো। নীট কম্পোজিট কারখানাটি নতুন। দুই কারখানার শ্রমিকদের সাথে বৈষম্য করা হয়, এমন অভিযোগ মিথ্যা। গ্রীণ লাইফ ক্লোথিং লিমিটেড এর পুরনো শ্রমিকরা সময়ের আবর্তে একটু বেশি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। গ্রীণ লাইফ নীট কম্পোজিট কারখানাতেও আমরা সরকার নির্ধারিত সকল সুযোগ সুবিধার বাইরেও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছি। শ্রমিকদের হঠাৎ এমন আচরণ সত্যিই দুঃখজনক।
কারখানায় মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে নিষেধ করার বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা যে বায়ার প্রতিষ্ঠানের কাজ করছি, এটা তাদের রিকোয়ারমেন্ট। বায়ার প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জনিত কারণে কারখানায় মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, কারখানার শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়টি জানতে পেরে আমাদের মালিক সায়মন সাহেব নিজে উপস্থিত থেকে শ্রমিকদের সকল দাবীদাওয়া মেনে নিয়েছেন। তাদের দুপুরে খাবার বিল বাবদ এখন থেকে ১৫০০ টাকা দেয়া হবে এবং মোবাইল নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতিও দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার পরে গতকাল কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। বুধবার সকাল থেকে যথারীতি ভালোভাবে কাজ চলছে।
এ বিষয়ে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ ১-এর পরিচালক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, হঠাৎ করে কারখানায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রকাশ করলে আমরা অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছিলাম। কিন্তু কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আগেই মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দাবী মেনে নিয়ে দ্রুত সমস্যাটি সমাধান করা করেছে।
মতামত লিখুন :