রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
শিল্প মালিকরা কারখানার মান উন্নয়নে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে এবং কর্মপরিবেশ উন্নত করতে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে গত এক দশকে। এর সুফল মিলছে এখন দেশের প্রধান এই রফতানি খাতে। এই কার্যক্রমের ফলেই দেশে গ্রিন ফ্যাক্টরি বা সবুজ কারখানার সংখ্যাও বেড়েছে গত এক দশকে। গত সপ্তাহেই সবুজ কারখানার সংখ্যা ২০০টি হয়েছে। সবুজ কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের প্রতি আস্থা বেড়েছে বিদেশি ক্রেতাদের। এমনটিই বলছেন এ খাতের উদ্যোক্তা ও বিজিএমইএ নেতারা।
জানা যায়, ১০ বছর আগে রফতানির প্রধান এ খাতে পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানার সংখ্যা ছিল মাত্র একটি। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে ২০০ ছুঁয়েছে। পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা জানান, রফতানি বাড়াতে বড় অবদান রাখছে এসব সবুজ কারখানা।
এ বিষয়ে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম সময়ের আলোকে বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর সারা বিশ্বে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক সম্পর্কে ব্যাপক নেতিবাচক অবস্থা তৈরি হয়েছিল। বিদেশি ক্রেতারা মনে করেছিল আমাদের পোশাক কারখানাগুলো নিরাপদ নয়। কিন্তু এক দশক পর ক্রেতাদের সে মনোভাব বদলে গেছে। দেশে সবুজ কারখানার সংখ্যা ২০০টি। আরও প্রায় ৫০০টির মতো কারখানা পাইপলাইনে আছে। আমরা কারখানার কর্মপরিবেশ বাড়াতে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াতে এবং পরিবেশবান্ধব কারখানা গড়তে গত এক দশকে আমরা ব্যাপক কাজ করেছি, অনেক বিনিয়োগ করেছি। তার সুফল আমরা এখন পাচ্ছি। সবুজ কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বিদেশি ক্রেতাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে যেমন মনোভাব বদলেছে, তেমনি আমাদের পোশাক শিল্পের প্রতিও তাদের আস্থা বেড়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমরা আগামীতে পোশাক রফতানি আরও বাড়াতে পারব।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ আগস্ট পরিবেশসম্মত সবুজ কারখানার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন বা লিড সনদ পায় আরও দুই পোশাক কারখানা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) এ সনদ দেয়। এ দুই কারখানার মধ্যে একটি হলো-লিডা টেক্সটাইল অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড অপরটি লিজ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড।
এর আগে পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তা সাজ্জাদুর রহমান মৃধার হাত ধরে ২০১২ সালে প্রথম পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানার যাত্রা শুরু দেশে। পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেডে স্থাপিত কারখানাটি হলো ‘ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও।’ এরপর একটার পর একটা সবুজ পোশাক কারখানা গড়ে উঠছে বাংলাদেশে। সবশেষ দুই কারখানা মিলে ২০০টি সবুজ কারখানার সনদ পেল দেশ। জানা গেছে, ইউএসজিবির সনদ পাওয়া সবুজ কারখানার মধ্যে রয়েছে প্লাটিনাম ৭৩টি, গোল্ড ১১৩টি, সিলভার ১০টি ও সার্টিফাইড চারটি। এতে সর্বমোট গ্রিন ফ্যাক্টরি বা সবুজ কারখানার সংখ্যা দাঁড়াল ২০০টিতে। বিশ্বের সেরা কিছু কারখানার আবাসস্থল বাংলাদেশ, বিশ্বের শীর্ষ ১৫টি লিড গ্রিন কারখানার মধ্যে ১৩টি বাংলাদেশে অবস্থিত।
কৃতজ্ঞতাঃ সময়ের আলো
মতামত লিখুন :