২০২২-২৩ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ। তবে আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে কাস্টমস থেকে রাজস্বে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। সার্বিক প্রবৃদ্ধির তুলনায় এ খাত থেকে রাজস্বে প্রবৃদ্ধি কম হওয়ায় আমদানি-রপ্তানির তথ্য পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্প্রতি মাসিক সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার কার্যপত্র সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সভায় এনবিআরের রাজস্ব আহরণ বিষয়ে বলা হয়, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। তবে সাময়িক হিসাবে এ সময়ে সংস্থাটি রাজস্ব আদায় করেছে ৩ লাখ ৩১ হাজার ৪১২ কোটি টাকা; যা লক্ষ্যমাত্রার ৮৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এর মধ্যে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে রাজস্ব এসেছে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৯১ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং আয়কর খাত থেকে ৯২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কাস্টমস থেকে রাজস্ব আহরণের হার ৮৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
এদিকে গত অর্থবছর লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এনবিআর রাজস্ব আহরণে পিছিয়ে থাকলেও আগের অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে ভ্যাট ও আয়কর খাত থেকে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে যথাক্রমে ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতের রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ১১ শতাংশ।
সভায় সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, কাস্টমসের রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধি কম হওয়ার বিষয়ে আমদানি-রপ্তানির তথ্য পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমদানি-রপ্তানির তথ্যসহ এনবিআরে আলাদা সভা আয়োজনের নির্দেশনা দেন তিনি। এ পরিপ্রেক্ষিতে সভায় এনবিআর চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে আলাদা একটি সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় এবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছিলেন, আমদানি-রপ্তানিতে যথেষ্ট পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়। এ জন্য কাস্টম হাউসগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন তিনি। তবে কোনোভাবেই যেন আমদানি-রপ্তানিকারকদের অহেতুক হয়রানিতে না পড়তে হয় বিষয়টিও খেয়াল রাখতে বলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে গত অর্থবছর আমদানি কার্যক্রম কিছুটা নিয়ন্ত্রিত ছিল। তাই এ খাতে রাজস্ব কম হতে পারে। তবে বিলাসী পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছিল, এ যুক্তিতে সেখান থেকে রাজস্ব কিছুটা বাড়ার কথা। তবে সঠিক তথ্য উদ্ঘাটনে খুব শিগগির একটি বৈঠক ডাকা হবে। আমদানি-রপ্তানির তথ্য বিশ্লেষণ করলে কাস্টমসের প্রবৃদ্ধি বিষয়ে ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে।
কৃতজ্ঞতাঃ সমকাল
মতামত লিখুন :