ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম চালু থাকলেও বন্দরের কন্টেইনার ডেলিভারিতে এর তেমন সুফল পাওয়া যায়নি। প্রতি বছরের মতো এবারের ঈদের ছুটিতেও কন্টেইনার ডেলিভারি নেমে আসে প্রায় শূন্যের কোটায়।
বন্দর সূত্র জানায়, ১৯ এপ্রিল ঈদের ছুটি শুরুর দিন বন্দরে কন্টেইনার ছিল ৩৫,৮৯৬ টিইইউ, যা ১,৮১৭ টিইইউ বেড়ে ২৪ এপ্রিল ৩৭,৫৬৯ টিইইউতে পৌঁছায়।
ছুটি শেষে কন্টেইনার ডেলিভারি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে আরও প্রায় এক সপ্তাহ। ততদিনে বন্দর ইয়ার্ডে অতিরিক্ত আরো কন্টেইনার জমা হবে বলে জানিয়েছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ৩,০০০ থেকে ৩,৫০০ কন্টেইনার ডেলিভারি হয়। ঈদের ছুটি শেষে কয়েক দিনের মধ্যে কন্টেইনার ডেলিভারি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।”
গত ১৯ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৫ দিন ছিল ঈদের ছুটি। এই ছুটিতে কেবল ঈদের দিন আট ঘন্টা ছাড়া বাকি সময় চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম শতভাগ চালু ছিল। একইভাবে শুধুমাত্র ঈদের দিন ছাড়া বাকি চারদিন চালু থাকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কার্যক্রম।
চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেমন- বেসরকারি আইসিডি, শিপিং এজেন্ট, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কার্যালয়ও চালু থাকে।
তবে আমদানিকারকর প্রতিষ্ঠানের অফিস, গুদাম বন্ধ থাকার কারণে বন্দর থেকে ডেলিভারি নেওয়া নেমে আসে প্রায় শূন্যের কোটায়। ২৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার ডেলিভারি হয় মাত্র ৩৮ টিইইউ। একই দিনে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় ৮,১৭৫ টিইইউ।
২৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কোনো কন্টেইনার ডেলিভারি হয়নি। আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে মাত্র ৯৭ কন্টেইনার। জাহাজে উঠেনি কোনো রপ্তানি কন্টেইনার। এই দিন বন্দরের ইয়ার্ডে কন্টেইনার ছিল ৩৭,৭১৩ টিইউউ।
এছাড়া, চট্টগ্রাম বন্দরে ২২ এপ্রিল ৩৫৭ টিইইউ; ২১ এপ্রিল ১,৮০২ টিইইউ; ২০ এপ্রিল ৩,৫৮৬ টিইইউ; ১৯ এপ্রিল ৫,০২৭ টিইইউ কন্টেইনার ডেলিভারি হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে কন্টেইনার ধারণক্ষমতা ৫৩,৫১৮ টিইইউ। কন্টেইনার হ্যান্ডলিংসহ অপারেশনাল কার্যক্রম সচল রাখতে সক্ষমতর ১৫ শতাংশের বেশি খালি রাখতে হয়।
চট্টগ্রামে মোট ১৯টি অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপো (আইসিডি) রয়েছে, যা অফ-ডক নামেও পরিচিত। এগুলোর মাধ্যমে চাল, গম, সরিষার বীজ, ছোলা, ডালজাতীয় খাদ্যদ্রব্যসহ ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্য এবং রপ্তানি পণ্যের ৯৫ শতাংশ চালান পরিচালিত হয়।
আইসিডি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশন (বিআইসিডিএ)- এর সেক্রেটারি জেনারেল রুহুল আমিন শিকদার বলেন, “ঈদের ছুটিতে আইসিডির কার্ক্রম স্বাভাবিক ছিল। রপ্তানি পণ্য সঠিক সময়ে জাহাজীকরণ হয়েছে। এবার ঈদে পোশাক শিল্প কারখানা রাপ্তানি পণ্যের অস্বাভাবিক চাপ না থাকায় স্টাফিং কার্যক্রমও ছিল স্বাভাবিক।”
কৃতজ্ঞতাঃ টিবিএস
মতামত লিখুন :