তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণের জন্য গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডে নিয়োগপ্রাপ্ত শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি নিয়ে আপত্তি জানাল ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি)। তাদের দাবি, শ্রম আইন ও বিধি উপেক্ষা করে এবং ক্রিয়াশীল কোনো শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা না করে শ্রমিক প্রতিনিধি নিয়োগ করা হয়েছে। শ্রমিক আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা দৃশ্যমান নয়।
আইবিসি আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি করেছে। শ্রমিক সংগঠনের এই জোটের সাধারণ সম্পাদক কুতুবউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শ্রম অধিদপ্তরে নিবন্ধিত তৈরি পোশাক খাতের ৮০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করে এমন ২০টি জাতীয় ও খাতভিত্তিক ফেডারেশনের সমন্বয়ে গঠিত এই জোট ২০১৩ সাল থেকে শ্রমিকদের অধিকার ও স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আইবিসি জাতীয় ত্রিপক্ষীয় পরামর্শক কমিটি (টিসিসি), পোশাক খাতের জন্য গঠিত ত্রিপক্ষীয় পরামর্শক কমিটি (আরএমজি টিসিসি), আরএমজি সাসটেইনিবিলিটি কাউন্সিলে (আরএসসি) প্রতিনিধিত্ব করে আসছে।
আইবিসি বলেছে, সরকার তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণে জন্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠনের উদ্যোগে বিষয়টি জানতে পেরে গত ৯ মার্চ আইবিসি থেকে শ্রমিক প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়নের জন্য এই জোটের সভাপতি আমিরুল হকের নাম প্রস্তাব করা হয়। তবে শ্রম আইন ও বিধি উপেক্ষা করে এবং ক্রিয়াশীল কোনো শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা না করে শ্রমিক প্রতিনিধি নিয়োগ করা হয়েছে। এতে শ্রমিকদের আশার প্রতিফলন না হওয়ার আশঙ্কা এবং আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে বলে দাবি করে আইবিসি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ১১ এপ্রিল পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণে জন্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এই কমিটিতে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান মালিকপক্ষের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলামকে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে আইবিসির সাধারণ সম্পাদক কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব করেন এমন একজনকে শ্রমিক প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় কমিটি গঠনের আগে আমাদের কারও সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ পোশাকশিল্পের মালিকপক্ষের প্রতিনিধি করা বিজিএমইএর একজন সাবেক সভাপতিকে ঠিকই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আমাদের আশঙ্কা, নিয়োগপ্রাপ্ত শ্রমিক প্রতিনিধির মাধ্যমে পোশাকশ্রমিকদের আশা–আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে না।
বিষয়টি নিয়ে নিম্নতম মজুরি বোর্ডে নিয়োগপ্রাপ্ত শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম বলেন, আশির দশক থেকে আমি ট্রেড ইউনিয়ন করছি। ২০১৩ সালে মজুরি বোর্ডে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিত্ব করেছি। ওই বছর মালিকপক্ষের সঙ্গে দর–কষাকষি করে নিম্নতম মজুরি ৩ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার ৩০০ টাকায় উন্নীত করেছি। শুধু তা–ই নয়, বোনাস ও ইনক্রিমেন্টের বিষয়টি মজুরি কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম করেছি।
কৃতজ্ঞতাঃ প্রথম আলো
মতামত লিখুন :