ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জিএসপি স্কিমের অধীনে বাণিজ্য সুবিধা তিন বছরের পরিবর্তে আরও ছয় বছর বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে। বলেছে যে এটি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ এবং আগামী বছরগুলোতে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বুধবার (১২ এপ্রিল) ঢাকার উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য ভ্যালেরি হায়ারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুরোধ জানান।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন এবং বাংলাদেশের বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে এর সম্ভাব্য প্রভাব, পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি এবং এর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
তারা ২০২৪-২০৩৪ সালের জন্য প্রস্তাবিত ইইউ জিএসপি স্কিম এবং এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরে জিএসপি প্লাসের অধীনে ইইউর বাজারে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধাগুলো কীভাবে প্রভাবিত করবে, সে সম্পর্কেও আলোচনা করেন।
ফারুক হাসান বলেন, প্রস্তাবিত জিএসপি স্কিমের নির্দিষ্ট ইইউ ‘সেইফগার্ড বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকে যে কোনো শুল্ক সুবিধার বাইরে রাখবে, যদিও দেশটি এলডিসি থেকে উত্তরণের পরে জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারে।
তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে, যা লাখো মানুষের জীবিকার উৎস। তাছাড়া, পোশাক শিল্প প্রধান রপ্তানি খাত হিসাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বটে।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পোশাক খাতের ব্যাপক গুরুত্ব থাকার কারণে বিজিএমইএ সভাপতি ইইউ থেকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা, বিশেষ করে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরও পোশাক শিল্পসহ রপ্তানি খাতের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেন।
তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে টেক্সটাইল থ্রেশহোল্ড মানদণ্ড প্রত্যাহার করার জন্য বা প্রস্তাবিত জিএসপি স্কিমে বাংলাদেশের জন্য প্রক্রিয়া / মেকানিজম পুনরায় ডিজাইন করার জন্য অনুরোধ জানান। যাতে করে বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুযেশনের পর জিএসপি প্লাস থেকে সুবিধা পেতে পারে।
বিজিএমইএ সভাপতি ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার জন্য ইইউকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জিএসপি স্কিমের অধীনে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে বিশ্ব বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করতে এবং এদেশের লক্ষাধিক মানুষের জন্য, বিশেষ করে বাংলাদেশের নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়তা করেছে।
তিনি ভ্যালেরি হায়ারকে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের অধিকার ও কল্যাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ব্যাপক অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
ফারুক হাসান ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সদস্যকে সার্কুলার ফ্যাশনে শিল্পের অগ্রগতি এবং টেকসই পোশাক উৎপাদনে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য পণ্য বৈচিত্র্যকরণ এবং প্রযুক্তিগত আপগ্রেডেশনের ওপর শিল্পের গুরুত্ব প্রদান বিষয়েও অবহিত করেন।
মতামত লিখুন :