নিজস্ব প্রতিবেদক : গার্মেন্টস সেক্টরে নিরাপদ কর্মস্থল, জীবন যাপন উপযোগী মজুরি এবং ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিজিএমইএ, সকল কারখানা মালিক, বায়ার এবং সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শ্রমিক নেতারা বলেছেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে ‘একটি গার্মেন্টস কারখানাও অনিরাপদ রাখবেন না’।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত এক প্রতীকি অবস্থানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, ১৯৯০ সালে সারাকা গার্মেন্টস থেকে শুরু করে রানা প্লাজা পর্যন্ত এ সেক্টরে দুইশতাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। মারা গেছে কয়েক হাজার শ্রমিক। আর যাতে কাউকে জীবন দিতে না হয় সে জন্য একটি গার্মেন্টস কারখানাও অনিরাপদ রাখা যাবে না।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে পথেঘাটে গজিয়ে উঠা অনিরাপদ কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে। সরকার রফতানি আয় দ্বিগুণ করার যে স্বপ্ন দেখছে তা বাস্তবায়ন করতে চাইলে অব্যশই গার্মন্টস সেক্টরকে নিরাপদ কর্মসস্থল হিসেবে নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্ব পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে রানা প্লাজা ও তাজরীন গার্মেন্টসের নিহত শ্রমিক সন্তান, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতীকি অবস্থান থেকে এসময় থেকে ৯ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
উত্থাপিত ৯ দফা দাবিগুলো হলো ;
১. নিরাপদ কর্মস্থল, জীবন-যাপন উপযোগী মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত এবং ইউনিয়ন গঠনে ছাঁটাই নির্যাতনসহ সব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।
২. রানা প্লাজা ও তাজরীন গার্মেন্টসে শ্রমিক হত্যায় দায়ীদের উপযুক্ত বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. আহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ফলোআপ চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. আর কোনো রানা প্লাজা-তাজরীনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য বায়ার, বিজিএমইএ, মালিক, সরকার, শ্রমিক সংগঠনসহ সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
৫. শ্রমিকদের জন্য শহরতলীর খাস জমিতে স্বল্প ব্যয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক কলোনি তৈরি করতে হবে।
৬. জাতীয় বাজেটে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা, সরকারি হাসপাতাল, নিরাপদ মাতৃত্ব কেন্দ্র, শিশু লালন কেন্দ্র ও বাসস্থান নির্মাণের জন্য সুস্পষ্ট বরাদ্দে দিতে হবে।
৭. সরকারি সেক্টরের মতো বেসরকারি এবং গার্মেন্টসেও মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস ঘােষণা করতে হবে।
৮. ব্যবসা, মুনাফা, কর্মনংস্থানের পাশাপাশি শ্রমিকদের জীবনকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিতে হবে।
৯. সব কারখানায় পর্যাপ্ত আলো বাতাস, ফ্যান, বিশুদ্ধ খাবার পানি, ওয়াশরুম, ক্যান্টিন নিশ্চিত করতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি আমিরুল হক আমিনের সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সাফিয়া পারভীন, কেন্দ্রীয় নেতা মো. ফারুক খান, কবির হোসেন, নাসিমা আক্তার, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
মতামত লিখুন :