ডেস্ক রিপোর্ট : আসন্ন ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে তৈরি পোশাক শিল্পে হ্রাসকৃত ১০ শতাংশ হারে কর্পোরেট কর দেয়ার সুযোগ চায় বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুতকারী ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এ সুযোগ আগামী ৫ বছরের জন্য চায় সংগঠনটি। অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে প্রাক-বাজেটে এ প্রস্তাব দেবে বলে বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, তৈরি পোশাক শিল্পে আগে হ্রাসকৃত ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হতো। যা ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। পরবর্তী কর্পোরেট করের মতো ৩৫ শতাংশ হারে কর দিতে হচ্ছে পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের। বিশ্ববাজারে এ খাতকে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখতে ও বিনিয়োগ বাড়াতে এ কর আবারো ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি ব্যবসায়ীদের।
এছাড়া প্রাক-বাজেট প্রস্তাবনায় রফতানিমুখি পোশাক খাতের উৎসে কর কর্তনের হার ০.৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে পূর্বের ন্যায় ০.৩০ শতাংশ করাসহ রফতানিকে আরো প্রতিযোগী করে তোলার জন্য স্থানীয় বাজার হতে সংগৃহীত সব পণ্যে ও সেবায় ভ্যাট মুক্ত রাখার আহ্বান জানাবে সংগঠনটি।
জানা গেছে, দেশের পোশাক শিল্প কারখানাকে নিরাপদ, ঝুঁকিমুক্ত, কমপ্লায়েন্স ও পরিবেশ-বান্ধব করতে যেসব যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয় সেক্ষেত্রে এবং এলইডি লাইট আমাদানির ক্ষেত্রে ফিক্সারের জন্য এইচএস কোডের আওতায় রেয়াতী হারে শুল্কায়ন সুবিধা প্রদান করার প্রস্তাব দেয়া হবে। বর্তমানে ফিক্সারের জন্য রেয়াতী হারে কোনো ধরনের শুল্কায়ন সুবিধা দেয়া হয় না।
এদিকে অগ্নি নিরাপত্তা সংক্রান্ত সকল যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। তৈরি পোশাক শিল্পকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় অবস্থান ধরে রাখার জন্য এসব যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ শুল্কমুক্তভাবে আমদানির সুবিধা চায় বিজিএমইএ। এছাড়া রফতানিমুখি তৈরি পোশাক শিল্পের অডিট কার্যক্রমের জন্য দলিলাদি দাখিলের সময় ৬ মাসের পরিবর্তে ৩ মাস করা, পোশাক শিল্পের প্রতিকূল প্রেক্ষাপটে সুরক্ষার জন্য আগামী ৩ বছর এ খাতে রফতানিকারকদের ৩ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদান এবং নতুন বাজারে পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে নগদ ৫ শতাংশ সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব করবেন সংগঠনটি।
এ সম্পর্কে বিজিএমইএ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান জানান, রফতানিমুখি খাত পোশাক শিল্প পরিচালনায় সব ধরনের খরচ বেড়েছে। লাইসেন্সসহ সরকারি বিভিন্ন ধরনের ফি বাড়ানো হয়েছে। প্রতিযোগী দেশের তুলনায় আমাদের দেশের ব্যাংক-ঋণের সুদহারও বেশি। এ অবস্থায় যদি কর্পোরেট কর কমানো না হয় তাহলে বিনিয়োগ বাড়বে না। তাই বিশ্ববাজারে এ খাতকে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ও পুনঃবিনিয়োগ বাড়াতে কর্পোরেট কর আগের ন্যায় ১০ শতাংশ করা উচিত।
তিনি বলেন, যদি কর্পোরেট কর কমানো হয় তাহলে ব্যবসায়ীরা লাভের অংশ পুনরায় বিনিয়োগ করবে। একইসঙ্গে পোশাক শিল্পে সাদা টাকা বিনিয়োগ বাড়বে। এতে ব্যাংক-ঋণের নির্ভরতা কমবে। ফলে সরকারের রাজস্ব আদায়ের পরিধিও বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, ইউরোপ-আমেরিকার উপর নির্ভরশীলতা কমাতে তৈরি পোশাক রফতানিতে নতুন বাজার সৃষ্টি করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সরকার ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দিতে নতুন বাজারে রফতানির ক্ষেত্রে নগদ ৫ শতাংশ সহায়তা করার জন্য বিজিএমইর পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হবে।
পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। এখন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে, তবে তা তরান্বিত করা উচিত। এছাড়া বর্তমানে দেশের পোশাক শিল্পে বড় সমস্যা হচ্ছে দক্ষ জনশক্তির অভাব। তাই এ জনশক্তি গড়ে তুলতে অত্যাধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর প্রশিক্ষণ লাগবে, আর এতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। সূত্র : জাগোনিউজ২৪ডটকম
মতামত লিখুন :