চট্টগ্রাম : পরিবারের চাহিদা মেটাতে গভীর রাত পর্যন্ত কারখানায় কাজ করছিলেন নারী পোশাক শ্রমিক মিনা (১৯) (ছদ্মনাম)। ভরসা কারখানার সুপার ভাইজারের ওপর, তিনি নিরাপদে পৌঁছে দেবেন বাসায়। কিন্তু না, তা হয়নি। রক্ষক হয়ে গেছেন ভক্ষক। সেই সুপার ভাইজার ও তার সাঙ্গ পাঙ্গদের হাতে গণধর্ষনের শিকার হয়েছেন ওই পোশাক শ্রমিক।
শনিবার (৯ এপ্রিল) দিনগত রাতে বায়েজিদ বোস্তামি থানার বালুচরা কূলগাঁও এলাকায় গণধর্ষনের শিকার হন ওই নারী পোশাক শ্রমিক। পরে সোমবার ধর্ষিতা নিজে বাদি হয়ে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। রাত ১১টার দিকে কূলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে গণধর্ষনের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- নেজাম উদ্দিন মিন্টু (২৫), মো. ওসমান গণি (২২) ও আলমগীর হোসেন (৩৫)।
ধর্ষিতার বরাত দিয়ে বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘ওই নারী পোশাক শ্রমিক বালুচরা কূলগাঁও এলাকার ‘কেয়ার চয়েজ গার্মেন্টস’ নামে একটি পোশাক কারখানা কাজ করতেন। গত ৯ এপ্রিল (শনিবার) রাতে কারখানার প্রয়োজনে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করেছিলেন তিনি। কাজ শেষে রাত ৩টার দিকে তিনিসহ তার আরো বেশ কয়েকজনক নারী সহকর্মীকে বাসায় পৌছে দেয়ার দায়িত্ব ছিলো কারখানার সুপার ভাইজার ওসমান গণির।’
তিনি আরো বলেন, ‘এসময় ওসমান কৌশলে বাকিদের বাসায় পৌছে দিলেও ওই পোশাক শ্রমিককে তার বাসায় পৌছে দেয়া থেকে বিরত থাকে। এসময় ওসমান অজ্ঞাত চারজন যুবককে দেখিয়ে বলে, তারা পোশাককর্মীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছে। নয়তো তাকে মেরে ফেলা হবে বলে জানায় ওসমান। এরপর কূলগাঁও এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে তারা ওই নারীকে রাতভর ধর্ষণ করে।’
ওসি জানান, রোববার (১০ এপ্রিল) ভোরে ওই নারীকে বাসায় দিয়ে যাওয়ার সময় ওসমান তাকে বিয়ে করবে বলে প্রলোভন দেখায়। কিন্তু পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ওসমানকে ধর্ষকদের সহযোগী করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে সোমবার সকালে একটি মামলা করেন ওই নারী পোশাককর্মী। রাতে অভিযান চালিয়ে গণধর্ষনের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তিনি আরো জানান, এসময় পুলিশকে সহায়তা করেছে দুই নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ড কাউন্সিলার শাহেদ ইকবাল বাবু ও কুলগাঁও এলাকার জনগন। ধর্ষনের শিকার ওই নারী এখন পুলিশ হেফাজতে আছে। মঙ্গলবার তাকে ডাক্তারী পরিক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।
মতামত লিখুন :