নিজস্ব প্রতিনিধি : ধর্মঘট, অবরোধ, আর্তনাদ করে আদায় হয়নি খুলনার পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতনসহ ৫ দফা দাবি। টানা প্রায় এক সপ্তাহ থেকে চলতে থাকা শ্রমিকদের এই আন্দোলনে এবার যুক্ত হলো নতুন মাত্রা। আাজ রোববার সকালে তারা প্রতিকী ভিক্ষুক মিছিল করেছেন, বকেয়া পাওনাসহ ৫দফা দাবি পূরণের আকুতি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। শ্রমিকদের ওই মিছিলে দেখা গেছে সকলের হাতে থালা কিংবা মাটির সানকি। মুখে স্লোগান, ‘ভাত দেন প্রধানমন্ত্রী না হইলে সংবিধান খাব’।
আন্দোলনকারীদের হাতে প্লাকার্ডে লেখা, ‘ভাত দেন প্রধানমন্ত্রী না হইলে সংবিধান খাব’
বেলা ১১টায় ৭ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে ৬ষ্ট দিনের মতো মিল ধর্মঘট পালনকালে থালা-বাসন হাতে শ্রমিকদের মিছিলটি নিজ নিজ মিল থেকে শুরু হয়ে খালিশপুর অঞ্চলের নতুন রাস্তা মোড় ঘুরে আবার যার যার মিলে ফিরে যায়।
খুলনার খালিশপুরের প্লাটিনাম, ক্রিসেন্ট, দিঘলিয়ার স্টার জুটমিল, আটরা শিল্প এলাকার ইস্টার্ন ও আলিম জুট মিল, যশোর অভয়নগর রাজঘাট শিল্পাঞ্চলের যশোর জুট মিল ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা বকেয়া পাওনাসহ ৫দফা দাবিতে এই আন্দোলন করছে। রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদ এ আন্দোলন সমন্বয় করছে।
মিছিলে অংশ নেওয়া প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক সিদ্দিক আলম ও ইস্টার্ন জুট মিলের আলেয়া বেগম বলেন,‘আমাগে বেতন করি নাই। পোলা পানে খাইতে পড়তে পারে না। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা ভাত কাপড়ের দাবি জানাচ্ছি।’ ‘৫ দফা দাবি শুধুমাত্র তাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য নয়। এটি দেশ এবং জনগণেরও দাবি। কারণ পাটকল লাভবান হলে দেশেরই উন্নয়ন হবে। অর্থনীতি সচল হবে। এতে শ্রমিকরাও ভালো থাকবে। কিন্ত দাবি আদায় না হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।’
আন্দোলরত শ্রমিকরা জানান, সোনালী আঁশ পাটই ছিলো বাংলাদেশের রফতানি আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস। সে গৌরব আজ অতীত। পাট খাতে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় দেশের অধিকাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলই বন্ধ হয়ে গেছে।
অভিনব এই মিছিলের বিষয়ে পরিষদের আহবায়ক মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন, খুলনার জেলা প্রশাসকের অনুরোধে আজ রোববার পর্যন্ত সময় দিয়ে শুধুমাত্র রাজপথ-রেলপথ অবরোধ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছিল বৃহস্পতিবার দুপুরে। আজ শেষ দিন। এখনও কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। তাই এই অভিনব উদ্যোগ।
তবে তিনি হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়, পে-কমিশনের ন্যায় অবিলম্বে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পে শ্রমিকদের জন্য মজুরী কমিশন বোর্ড গঠন, ১ জুলাই ২০১৩ ঘোষিত ২০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান ও খালিশপুর, দৌলতপুর, জাতীয়, কর্ণফুলী জুট মিলের শ্রমিকদের স্থায়ীণকরণ ও সকল পাওনা পরিশোধের দাবি আজকের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে আগামীকাল সোমবার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত রাজপথ-রেলপথ অবরোধ করা হবে। প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা করে অবরোধ চলবে যতদিন দাবি বাস্তবায়ন না হয়
মতামত লিখুন :