ডেস্ক রিপোর্ট : দেশের রফতানি বাণিজ্যে বিশেষ অবদানের জন্য সিআইপি হলেন ১৬৪ ব্যবসায়ী। প্রতিবছরের মতো ২০১৩ সালের জন্য বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সিআইপি হিসেবে নির্বাচিত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে রফতানিতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১২৫ জন ও পদাধিকার বলে এফবিসিসিআইর ৩৯ জন পরিচালক সিআইপি কার্ড পেলেন।
গতকাল রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে সিআইপি-২০১৩ কার্ড বিতরণ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা ও এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ প্রমুখ। এ অনুষ্ঠান যৌথভাবে আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো। সিআইপি কার্ডধারী ব্যক্তিরা সচিবালয়ে প্রবেশে সেটি বিশেষ পাস হিসেবে ব্যবহার করবেন। ব্যবসা-সংক্রান্ত ভ্রমণে বিমান, রেল, সড়ক ও নৌপথে সরকারি যানবাহনে সংরক্ষিত আসনে অগ্রাধিকার, বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহার, ব্যবসায়িক কাজে বিদেশ ভ্রমণের ভিসা প্রাপ্তির জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন সুবিধা পাবেন।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সিআইপি কার্ড বিতরণে এখন অনেক প্রক্রিয়ার কারণে সময় বেশি লাগছে। এসব প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হবে; যাতে গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যবসায়ীরা যথাসময়ে কার্ড পান। তিনি বলেন, ব্যবসায়ী নানা দলের ও মতের হতে পারেন। সরকার সবাইকে সম্মাননা দিচ্ছে। তবে যারা যুদ্ধাপরাধী ও দেশবিরোধী তাদের বাদ দিয়ে যাচাই-বাছাই করে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০০১ সালে ৭ বিলিয়ন রফতানি থেকে বিএনপি পাঁচ বছরে ৩ বিলিয়ন বাড়িয়ে ১০ বিলিয়ন করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৪ বিলিয়ন বাড়িয়ে ১৪ বিলিয়ন করেছে। বর্তমান সরকার গত আট বছরে ২০ বিলিয়ন বাড়িয়ে ৩৪ বিলিয়ন করেছে। আগামী ২০২১ সালে ৬০ বিলিয়ন রফতানি হবে।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে সরকার।
মাতলুব আহমাদ গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম কমানোর প্রস্তাব দেন। মানসম্মত শিল্পের বিদ্যুতের দাম ৫ থেকে ৬ টাকার মধ্যে রাখার দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি বাণিজ্য সম্প্রসারণে দ্রুত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার করার আহ্বান জানান।
২০১৩ সালের ২২টি পণ্য খাতের মধ্যে ১৪টি পণ্য খাতে সিআইপি দেওয়া হয়েছে। ওভেন পোশাকে সিনহা ইন্ডাস্ট্রিজের আনিসুর রহমান সিনহা, অনন্ত অ্যাপারেলের শরীফ জহীর, তুসুকা ট্রাউজারের আরশাদ জামাল, সাইনেস্টের আলী আজিম খান, ফ্যাশন ফোরামের ইদ্রিস সাকুর, স্মার্ট জিন্সের মুজিবুর রহমান, শারমিন অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল হোসেন, আলিফ গার্মেন্টসের আজিজুল ইসলাম, ডার্ড গার্মেন্টসের ইতেমাদ উদ দৌলাহ, রেডিসন অ্যাপারেলের খান আবু মাসুদ মো. আসাদুজ্জামান, হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন, প্যাসিফিক গ্রুপের নাসির উদ্দিন, এ্যাবা গ্রুপের সাজ্জাদুর রহমান মৃধা, স্টারলিং গ্রুপের সিদ্দিকুর রহমান, অনন্ত গ্রুপের ইনামুল হক খান, ইসলাম ড্রেসেস গ্রুপের আতিকুল ইসলাম, আবেদিন গ্রুপের কাজী এ এফ এম জয়নুল আবেদিন ও জিন্স এক্সেসের রতন কুমার দত্ত সিআইপি কার্ডের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।
নিট পোশাকে জিএমএস কম্পোজিটের গোলাম মুস্তফা, ফোর এইচ ফ্যাশনসের গাওহার সিরাজ জামিল, ফারিহা নিটের আসাদুল ইসলাম, মেট্রো নিটিংয়ের অমল পোদ্দার, ম্যাট্রিক্স সুয়েটারের সালাউদ্দিন আলমগীর, ইন্টারস্টফের নাজিম উদ্দিন আহমেদ, মডেল কি ক্যাপিটালের মাসুদুজ্জামান, ডার্ড কম্পোজিটের নাবিল উদ দৌলাহ, এসএম নিটওয়্যারের সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান, অবন্তী কালার টেক্সের আসলাম সানি, তুং হাই সুয়েটারের আঞ্জুমান-আরা-খানম, দিগন্ত সুয়েটার্সের কামাল উদ্দিন, মালটিফ্যাবসের মহিউদ্দিন ফারুকী, আদুরী অ্যাপারেলের আবদুল কাদির মোল্লা, মোয়াজ্জেমউদ্দিন নিট ফ্যাশনের লুৎফুর রহমান, উইজডম অ্যাটায়ার্সের সেলিম ওসমান, মেঘনা নিট কম্পোজিটের মোখলেছুর রহমান, আমান টেক্সের রফিকুল ইসলাম, স্টার লাইট সুয়েটারের সুলতানা জাহান, লিবাস টেক্সটাইলের মশিউর রহমান, নেটওয়ার্ক ক্লথিংয়ের বোরহান উদ্দীন, করিম টেক্সটাইলের আবদুল হাই সরকার, বি-কন নিটওয়্যারের প্রীতি পোদ্দার, লাক্সমা ফ্যাশনের রানা শফিউল্লাহ, প্যাপিলন নিটের নুরুল আলম চৌধুরী, আরএসআই অ্যাপারেলের অঞ্জন শেখর দাশ, ডিভাইন ফেব্রিক্সের ফাতেমা জামান, মাইলস ফেব্রিক্সের সৈয়দ মো. আবদুল হাই, সিকদার গ্রুপের নাফিস সিকদার, জিন্নাত গ্রুপের আবদুল ওয়াহেদ, ক্লিফটন গ্রুপের এম জালাল উদ্দিন চৌধুরী, ইসলাম গ্রুপের সাকের আহম্মেদ, কেডিএস গ্রুপের খলিলুর রহমান, লিবার্টি গ্রুপের মো. শামসুজ্জামান ও জে কে গ্রুপের জাহাঙ্গীর আলম খান সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন।
কাঁচা পাটপণ্য খাতে সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন পপুলার জুটের হাসান আহমেদ, উত্তরা জুটের সুজিত কুমার ভট্টাচার্য্য, খান ব্রাদার্সের সেলিম রেজা, জনতা জুটের নাজমুল হক, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রির মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির ও জেম জুটের কাজী নাবিল আহমেদ। চামড়া (ক্রাস্ট ও ফিনিশড) খাতে সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন এপেক্সের আবদুল মাজেদ, এসএএফ ইন্ডাস্ট্রির শেখ মোমিন উদ্দিন, বে ট্যানারির শামসুর রহমান ও করিম লেদারের রেজাউল করিম আনসারী। চামড়াজাত দ্রব্যে এফবি ফুটওয়্যারের অনিরুদ্ধ কুমার রায়, পিকার্ডের মোহাম্মদ সায়ফুল ইসলাম, আরএমএম লেদারের মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন, গোল্ডেন মুনের কাজী রাশেদ হাসান ফেরদৌস, এবিসি ফুটওয়্যারের জয়নাল আবেদীন মজুমদার, আকিজ ফুটওয়্যারের শেখ মোমিন উদ্দিন, ঢাকা ফুটওয়্যারের ফিরোজা বেগম ও লেদারেক্স গ্রুপের মোহাম্মদ নাজমুল হাসান সিআইপি কার্ড পাচ্ছেন।
হিমায়িত খাদ্যে সি-মার্কের রেজাউল হক, ফ্রেশ ফুডের মোহাম্মদ আমিন উল্যাহ, জেমিনি ফুডের কাজী শাহেদ আহমেদ, এটলাস ফুডের এসএম মিজানুর রহমান, জালালাবাদ গ্রুপের আবদুল জব্বার মোল্লা, সালমা সি-ফুডের মিঞা মোহাম্মদ আবদুস সালাম, সি-রিসোর্সের আবদুর রউফ চৌধুরী ও কনসোলিডেটেড আহমেদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী সিআইপি কার্ড পাচ্ছেন।
কৃষিজাত পণ্যে রাজধানী এন্টারপ্রাইজের গোবিন্দ চন্দ্র সাহা, মনসুর জেনারেলের মোহাম্মদ মনসুর, ক্যাপিট্যাল এন্টারপ্রাইজের গকুল চন্দ্র সাহা, এলিন ফুডসের ওমর ফারুক, লিটন ওয়ার্ল্ড লিংকের রফিকুল ইসলাম, এগ্রিকনসার্নের শেখ আবদুল কাদের, ফার্ম ফ্রেশ এন্টারপ্রাইজের সেলিনা কাদের ও ইসলাম এন্টারপ্রাইজের জহিরুল ইসলাম এবং কৃষি প্রক্রিয়াকরণ পণ্যে রোহান এন্টারপ্রাইজের জহিরুল ইসলাম, প্রাণ এগ্রোপ্রসেসিংয়ের পরিচালক ইলিয়াস মৃধা, এলিন ফুডের ওমর ফারুক, স্কয়ার কনজুমার প্রডাক্টসের অঞ্জন চৌধুরী, আজমী ফুডের আজমী মোহাম্মদ আবু শাহরিয়ার ও কিষোয়ানের আবদুল মোতালেব সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন। প্লাস্টিক পণ্যে বেঙ্গল প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজের জসিম উদ্দীন, দাদা ব্যাগের শেখ মোহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদ, ব্রাইট প্লাস্টিকের বিশ্বজিত সাহা ও দেশবন্ধু পলিমারের গোলাম রহমান এবং বস্ত্র খাতে নোমান উইভিংয়ের মোহাম্মাদ নুরুল ইসলাম, প্যারামাউন্ড টেক্সটাইলের সাখাওয়াত হোসেন, ইসমাইল টেক্সটাইলের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জাবের, পূর্বাণী ফেব্রিক্সের আবদুল হাই সরকার ও হামিদ গ্রুপের আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া হালকা প্রকৌশল, হস্তশিল্প, ডিহাইড্রেটেড সল্টেড, অন্যান্য মাছ রফতানিসহ বিবিধ খাতে এবং ২০১৩ সালের এফবিসিসিআই পরিচালকরা সিআইপি কার্ড পেয়েছেন।
মতামত লিখুন :