ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) ও বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএ) যৌথ আয়োজনে গতকাল ঢাকায় শুরু হয়েছে গ্লোবাল কটন সামিট-২০১৭। এ নিয়ে বাংলাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো সামিটটি আয়োজন করা হচ্ছে। রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে দুই দিনব্যাপী গ্লোবাল কটন সামিটের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজক দুই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ঢাকায় বতসোয়ানার হাই কমিশনার লেসেগো ই মাতসুমি, ইন্ডিয়ান কটন অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মহেশ, এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও আফ্রিকান কটন অ্যাসোসিয়েশনের ইব্রাহীম মাল্লুম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, পোশাক শিল্পের জন্য বাংলাদেশের প্রচুর তুলা প্রয়োজন। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তুলা আমদানিকারক দেশ। দেশে তুলার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এজন্য আমদানি-নির্ভরতা কমিয়ে দেশে তুলা উত্পাদন বাড়ানোর প্রতি নজর দেয়ার তাগিদ দেন তিনি। পাশাপাশি বিশ্বের শীর্ষ তুলা উত্পাদনকারী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ আরো শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন তিনি। তিনি বলেন, আমাদের পোশাকপণ্যকে আরো বেশি প্রতিযোগিতামূলক করা হবে, যেন বিশ্ব অর্থনীতিতে যেকোনো ধরনের ধাক্কা সামাল দেয়া যায়।
এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি সফিউল ইসলাম বলেন, আমাদের জমি সীমিত। যতটুকু চাষযোগ্য জমি রয়েছে, তা খাদ্য উত্পাদনে ব্যবহার হয়। তাই তুলা চাষ করার মতো পর্যাপ্ত জমি আমাদের দেশে নেই। বাংলাদেশে যে পরিমাণ তুলা উত্পাদন হয়, তা কারখানাগুলোর চাহিদা পূরণে যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আফ্রিকায় জমি কিনে, প্রয়োজনে লিজ বা বর্গা নিয়ে তুলা চাষ করবে। সেখানে প্রচুর জমি পড়ে আছে।
বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ বলেন, তুলা শিল্পের এ সম্মেলন এত দিন বিশ্বের নানা দেশে অনুষ্ঠিত হলেও দুই বছর ধরে তা বাংলাদেশে হচ্ছে।
বাংলাদেশে স্পিনিং মিলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও তুলা কেনাবেচায় জড়িত কর্মকর্তারা এ সামিটে অংশগ্রহণ করছেন। এছাড়া দেশী-বিদেশী ব্যবসায়ী, শিপিং এজেন্ট ও মার্চেন্টরাও এতে যোগ দিয়েছেন। বাংলাদেশ, ভারত, সুদান, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, মালি, বুরকানাফাসো, শাদ, তুরস্ক, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রতিনিধি এতে অংশ নিচ্ছেন। আয়োজক সংগঠনগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশের স্পিনিং ক্ষমতা ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। ফলে আগামীতে অতিরিক্ত ১৫ লাখ বেল তুলার প্রয়োজন হবে। গ্লোবাল কটন সামিট এ লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০০৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ তুলা আমদানি করেছে প্রায় ৬১ লাখ বেল। তুলা আমদানিতে গত এক দশকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০০ শতাংশের বেশি। ২০২১ সালে বাংলাদেশ টেক্সটাইল ও পোশাক রফতানি থেকে ৫ হাজার কোটি ডলার আয়ের স্বপ্ন দেখছে। এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে ইয়ার্ন ও ফ্যাব্রিকের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। সুতা তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচা তুলার উত্স ও সরবরাহ অক্ষুণ্ন রাখতে হবে। গ্লোবাল কটন সামিট এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। সৌজন্যে : দৈনিক বনিকবার্তা
মতামত লিখুন :