নিজস্ব প্রতিবেদক : এপ্রিলের ১৫ তারিখ শুরু হচ্ছে চায়না আমদানি ও রপ্তানি মেলা; যা ক্যান্টন ফেয়ার নামে সারা বিশ্বে সুপরিচিত। বিশ্বের বৃহৎ পণ্যমেলা হিসেবেও এটি পরিচিত। চীনের ঐতিহ্যবাহী এবং মর্যাদাপূর্ণ এই মেলায় দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশী ব্র্যান্ড ওয়ালটন। এবারও এই মেলায় ’মেড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্যের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারি প্রতিষ্ঠানও ওয়ালটন।
চীনের গুয়াংজু প্রদেশে এপ্রিলের ১৫ থেকে শুরু হয়ে ১৯ তারিখ পর্যন্ত চলবে ১২১তম ক্যান্টন (চায়না ইমপোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট) ফেয়ার। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ৬০ বছর ধরে নিয়মিত বসছে এই মেলা। এপ্রিলের এই বসন্ত মেলায় (স্প্রিং ফেয়ার) ইলেকট্রনিক্স এন্ড হাউজহোল্ড ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস, লাইটিং ইক্যুইপমেন্ট, ভেহিক্যালস এন্ড স্পেয়ার পার্টস, মেশিনারি এবং হার্ডওয়্যার এন্ড টুলস পণ্য প্রদর্শিত হবে। ইলেকট্রনিক্স এন্ড হাউজহোল্ড ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস ক্যাটাগরীতে অংশ নিচ্ছে ওয়ালটন। ক্যান্টন ফেয়ার এর আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়নে স্থাপন করা হয়েছে ওয়ালটনের মেগা প্যাভিলিয়ন।
মেলায় প্রদর্শিত হবে ওয়ালটন কারখানায় তৈরি আন্তর্জাতিকমানের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্যসমূহ। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপক বিদ্যুত সাশ্রয়ী রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এলইডি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, রিচার্জেবল ফ্যান, সিলিং ফ্যান, রাইসকুকার, ব্লেন্ডার, গ্যাস স্টোভ, ইলেকট্রিক সুইস-সকেট, ইন্ডাকশন কুকার, এসিড লেড রিচার্জেবল ব্যাটারিসহ বিভিন্ন হোম ও ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস। থাকছে বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তিতে ওয়ালটন কারখানায় তৈরি কম্প্রেসর।
উল্লেখ্য, ক্যানটন ফেয়ারের ইতিহাসে গতবছর প্রথমবারের মত বাংলাদেশী কোনো ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে অংশ নিয়েছিল ওয়ালটন। এতে অংশ নেন বিশ্বের ২’শরও বেশি দেশ থেকে আসা তিন লক্ষাধিক বড় ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক। গেলো বছল সাশ্রয়ী মূল্য এবং উচ্চমানের পণ্য দিয়ে গ্লোবাল বায়ারদের ব্যাপক প্রসংশা পেয়েছিল ওয়ালটন।
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা, গতবছরের মতো এবারও তারা শতভাগ সফল হবেন। এরইমধ্যে ওয়ালটনের ২৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চায়না পৌঁছেছে। ক্রেতা-দর্শণার্থীদের কাছে ওয়ালটন পণ্যের বিশেষ দিক তুলে ধরতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ এবং আকর্ষণীয় স্থানে স্থাপন করা হয়েছে ওয়ালটনের জায়ান্ট বিজ্ঞাপন বোর্ড। ভিডিও স্ক্রিনে ওয়ালটনের বিজ্ঞাপন, ডক্যুমেন্টারি ও বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া প্রদর্শন করা হবে। মেলার বাইরেও যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, আফ্রিকা, মধ্য প্রাচ্য, ভারত, নেপাল, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশে চালানো হচ্ছে ব্যাপক প্রচারণা । ওইসব অঞ্চলে নিয়োজিত ওয়ালটনের পরিবেশক এবং প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশের যেসব ক্রেতা ক্যান্টন ফেয়ারে যাবেন তাদেরকে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের প্রধান রকিবুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের বাজারে নীরঙ্কুশ প্রাধান্য রয়েছে ওয়ালটনের। এবার টার্গেট হলো- বিশ্ব বাজারেও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করা। লক্ষ্য বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে চীনের ক্যান্টন ফেয়ার। তিনি যুক্তি দেখান, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ থেকেই ছোট-বড় মিলিয়ে কয়েক লাখ ব্যবসায়ী ও ক্রেতা আসেন এখানে। ওইসব ক্রেতাদের সঙ্গে ওয়ালটনের একটি আন্তর্জাতিক সেতুবন্ধন তৈরি হবে।
ওয়ালটনের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, ক্যান্টন ফেয়ার হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ প্লাটফরম। পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন। এখানে বিশ্বের সেরা মানের পণ্য নিয়েই হাজির হচ্ছে ওয়ালটন। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন ঘটিয়ে উচ্চমানের পণ্য দিয়ে বিশ্বের যে কোনে ব্র্যান্ডকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি আমরা। প্রতিনিয়ত ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের শীর্ষ পণ্যমেলায় অংশ নিচ্ছি। তিনি বলেন, ক্যান্টন ফেয়ারে অংশ নেয়ায় শুধু ওয়ালটনের নয়; বিশ্ব ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হবে।
মতামত লিখুন :