নিজস্ব প্রতিনিধি : ঘণ্টায় ৪.৫ ডলার মজুরী পাই, বাসা ভাড়া আর খাবার কেনার পর কিছুই থাকেনা। এটা মেক্সিকো বা চীনের কোন শ্রমিকের আর্তনাদ নয়। এটা কোন রেস্টুরেন্টের অবৈধ অভিবাসী শ্রমিকের কান্না নয়। খোদ আমেরিকার লসএঞ্জেলসের এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরী পাচ্ছেন না এবং মানবেতর জীবন মেনে নিয়েছেন বলে তথ্য পেয়েছেন সে দেশের শ্রম বিভাগ।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যের ন্যূনতম বেতন অনেক কম হওয়ায় সারা বিশ্বব্যাপী এটা নিয়ে মানবাধিকারকর্মী ও শ্রমিকনেতাদের সমালোচনা নতুন নয়। বিভিন্ন সময় এই দেশটির শ্রমিকরা বিশেষ করে রেস্টুরেন্ট শ্রমিকরা অতিরিক্ত কাজ করলেও ওভার টাইমের জন্য আইন অনুযায়ী কোন অতিরিক্ত অর্থ পান না বলেও অনেক সমালোচনা শোনা গেছে। এবার জানা গেল আরও ভয়ংকর তথ্য। শত শত বছরের সভ্যতার ইতিহাস আর সারা দুনিয়ার মোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের লসঅ্যানজেলসের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ন্যূনতম বেতনের অর্ধেক মজুরীতে কাজ করছে। সম্প্রতি আমেরিকার শ্রম বিভাগের এক তদন্তে বেড়িয়ে এসেছে এমন তথ্য।
পেদ্রো নামের এক শ্রমিক জানান, তিনি প্রতি ঘন্টায় ৪.৫০ ডলার মজুরী পান। মার্কেটের বেসমেন্ট এ পরিচালিত একটি কারখানার এই শ্রমিক আরও জানান হচ্ছে আর পেদ্রো তাঁর দুই রুমমেটের সাথে শেয়ার করে থাকলেও বাসা ভাড়া আর খাবার খরচের পর আর কিছুই হাতে থাকে না তাঁর।
এদিকে শ্রম বিভাগ জানায়, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত অনেক বড় বড় খুচরা বিক্রেতা ব্র্যান্ডকে পোশাক সরবরাহকারী ৭৭ টি কারখানায় তদন্ত চালালে ভয়ংকর সব চিত্র ফূটে উঠে। তাদের তথ্য অনুযায়ী ৮৫ শতাংশ কারখানা শ্রম আইন লঙ্ঘন করছে। শ্রমিকদের ১.১ ডলার ঠকানো হয়েছে বলেও তারা উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য যে রাজ্যের ন্যূনতম বেতন প্রতি ঘন্টায় ১০ ডলার হলেও এসব কারখানা ন্যূনতম বেতন দেয় ৪.০০ ডলার।
শ্রম বিভাগ কারখানাগুলিকে জরিমানা করলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে এসব কারখানায় ক্রয়াদেশ দেয়া ব্র্যান্ডগুলি। শ্রম বিভাগের কর্মকর্তা রোবেল রোজালেস জানান, ব্যবসার মডেল ধিরে ধিরে আইনগত কর্তব্য থেকে আমাদের দূরে ঠেলে দিচ্ছে। ব্র্যান্ডগুলির বছরের পর বছর পণ্যমূল্য না বাড়ানো কে এসব সমস্যার জন্য দায়ী করেন।
৩৫ বছর বয়স্ক এক শ্রমিক গারছিয়া জানান, সপ্তাহে ৫৫ ঘন্টা কাজ করে প্রতি পিস ব্লাউস এর জন্য ২২ সেন্ট হিসেবে তিনি ৩২০ ডলার আয় করতে পারেন। ক্যালিফোর্নিয়াতে ৩২০ ডলার সপ্তাহে আয় করে কারো পক্ষেই সাধারন জীবন যাপন সম্ভব নয়।
শ্রম বিভাগের কর্মকর্তারা এসব কারখানায় কাজ করা ব্র্যান্ডদের সরবরাহকারীদের উপর নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠার তাগিদ দিয়েছেন।
মতামত লিখুন :