ডেস্ক রিপোর্ট : দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সংগতি রেখে ন্যূনতম মাসিক মজুরি ১৮ হাজার রুপি করা এবং শিল্প-কারখানার বেসরকারীকরণ ঠেকানোসহ ১৪ দফা দাবিতে গতকাল ভারতজুড়ে সাধারণ ধর্মঘট পালন করেছে সেবা খাতের লাখ লাখ শ্রমিক। দেশটির অন্যতম ১০টি শ্রমিক সংগঠনের ডাকে এ কর্মসূচি পালিত হয়। ১৫ কোটির বেশি শ্রমিক এতে অংশ নিয়েছে বলে সংগঠনগুলোর দাবি।
গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সাড়া ফেলেছে। অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও দুটি সরকারি বাস পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে এবং ২০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজ্যটির ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা আঞ্জু শর্মা এ তথ্য জানান।
ধর্মঘটে সবচেয়ে বেশি সাড়া পাওয়া গেছে বাম প্রভাবিত কেরালা ও ত্রিপুরা রাজ্যে। সিপিআইএমের কর্মীরা সব ধরনের পরিবহন চলাচলে বাধা দেয়। এ দুটি রাজ্যে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কার্যত বন্ধ থাকে। কেরালার কয়েক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে ধর্মঘটকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে ত্রিপুরায় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি বলে জানান পুলিশের মুখপাত্র উত্তম ভৌমিক। প্রভাব পড়ে তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, উত্তর প্রদেশ ও হিমাচল প্রদেশে।
ভারতের অ্যাসোসিয়েটেড চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (আসোচেম) দাবি করেছে, কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলোর ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে বাণিজ্য, পরিবহন, অন্যতম কিছু উৎপাদন খাত এবং ব্যাংকিং খাতে সব মিলিয়ে ১৬ হাজার কোটি থেকে ১৮ হাজার কোটি রুপির ক্ষতি হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনগুলোর আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় তারা দেশজুড়ে ধর্মঘট আহ্বান করে। তাদের ১৪ দফা দাবির মধ্যে আরো রয়েছে দুই টাকা কেজি দরে চাল-গম দেওয়া, শ্রমিকদের মাসিক পেনশন তিন হাজার রুপি করা। এ ছাড়া অনুৎপাদনশীল কারখানা বন্ধ করা, বেশ কিছু শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ আহ্বান করা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত কম্পানিগুলোর শেয়ার ছাড়ার ব্যাপারে সরকার যেসব পরিকল্পনা নিয়েছে, সেগুলো বাতিলেরও দাবি জানায় শ্রমিক সংগঠনগুলো। শিল্প খাতে বেসরকারীকরণের ফলে চাকরির বাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির আশঙ্কায় তারা নিজেদের দাবি আদায়ে ধর্মঘট ডাকে।
সূত্র : দৈনিক কালের কণ্ঠ, টাইমস অব ইন্ডিয়া, এএফপি।
মতামত লিখুন :